শাহিদুর রহমান,দিরাই উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা কুলঞ্জ ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামে রাতের আধাঁরে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা সমপরিমাণ মূল্যের দুটি ষাঁড় গরু চুরি হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রাম নিবাসী মোঃ ফয়েজ উল্লা ও পাশ্ববর্তী বাড়ি মোঃ উসমান গুণীর গোয়াল ঘর থাকা বিগত ২ আগষ্ট রোজ বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাতনামা চুরেরা ফয়েজ উল্লা ও উসমান গুণী দুই ঘর থেকে ২টি ষাঁড় গরু চুরি করে নিয়ে গেছে। এই গরু দুটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হবে বলে গরুর মালিক ও আশপাশের লোকজন জানিয়েছেন।
গরুর মালিক মোঃ ফয়েজ উল্লা বলেন, প্রতিদিনের মতো আমার গরুকে গোয়াল ঘরে রেখে ঘুমিয়ে পরি, রাত দুইটার সময় ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ষাড় গরুটি ঘরে নেই। এই গরুটাই ছিল আমার একমাত্র সহায়সম্বল। আমার গরুটা ঈদ উপলক্ষে ৮০ হাজার টাকা দাম হয়েছিল বিক্রি করিনি। ভাবছিলাম আগামী ঈদে বিক্রি করলে হয়তো লাখ টাকার উপরে পাবো। সেই স্বপ্নটা চোরেরা তসনস করে দিয়েছে।
এব্যাপারে চুরি যাওয়া গরুর মালিক মোঃ উসমান গুণী বলেন, প্রতিদিনের মতো রাতে গরু গুলোকে দেখভাল করে গোয়াল ঘরের দর্জা বন্ধ করে আমাদের বড়ো ঘরে ঘুমিয়ে পরি। রাতে আমার পার্শ্ববর্তী ঘর থেকে গরু চুরি হয়েছে সকালে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করে দেখি আমার ষাঁড় গরুটা নেই। তখন বুঝতে পারি চুরেরা আমার গরুটাও চুরি করে নিয়ে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার চুরি যাওয়া গরুটি বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা হবে।
পিতাম্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মোঃ ছুফি মিয়া বলেন, আমরা হওর এলাকার মানুষ এক ফুসলিয়ো জমির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করি। এভাবে যদি আমাদের গ্রামের বাড়িতে চুরি হয় তাহলে কিভাবে আমরা বসবাস করবো। চোরের ব্যাপারে আমাদের গ্রামের মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে চুরকে চিহ্নিত করে এদেরকে কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হয় চোরেরার সাহস বেড়ে যাবে।
পিতাম্বরপুর গ্রামের মোঃ ইসলাম উদ্দিন বলেন, আমার চাচা মোঃ ফয়েজ উল্লা ও মোঃ উসমানগণী তাদের দুই ঘর থেকে রাতের আঁধারে দুটি ষাঁড় গরু চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে, আমরা বেশ কয়েকজন রাতেই ছমির চাচার নৌকা দিয়ে আমাদের আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করে কোন তথ্য না পাওয়ায় পরদিন বিভিন্ন গরুর হাটে খোজাখুজি করেও এখন পর্যন্ত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
পিতাম্বর গ্রামের জামে মসজিদের সভাপতি সভাপতি মোঃ ছমির মিয়া বলেন, রাত প্রায় দুইটার উপরে আমি পুরো ঘুমের মধ্যে, হঠাৎ করে চিল্লাচিল্লি শুনি আমার বড়ো বোন জামাই ফয়েজ উল্লা গুরু চুরি হয়েছে, সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে আমার নিজের ইঞ্জিল চালিত নৌকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করে কোন সাড়াশব্দ পেলাম না। সকালে আবার শুনি আমার চাচাতো ভাই উসমানগুণী তার একটি গরু চুরি হয়েছে। আমরা এখনও খুঁজাখুঁজি করছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কুলঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরার হোসেন একরার বলেন, চুরি হওয়ার ঘটনা আমি শুনেছি, এর আগেও হাতিয়া থেকেও গরু চুরি হয়েছে আমি থানায় অবগত করেছি।
এবিষয়ে কুলঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মঞ্জুর আলম চৌধুরী বলেন, পিতাম্বরপুর থেকে রাতের আঁধারে দুটি ষাঁড় গরু চুরি হয়েছে আমি শুনেছি। হাওর এলাকায় বর্ষাকালে গরু চুরি সত্যি দুঃখজনক।
এবিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে কি-না জানতে চাইলে গরুর মালিকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, এখনও থানায় অভিযোগ করা হয়নি। থানায় অভিযোগ না হওয়ায় থানার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি