Friday, November 21, 2025

মনিরামপুরে ৫ শহীদকে শ্রদ্ধায় স্মরণ

Date:

Share post:

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ 

যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলার হরিহর নদীর তীরে বধ্যভূমিতে মনিরামপুরে পাঁচ শহীদকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ শে অক্টোবর) শহীদ বিপ্লবী স্মৃতি রক্ষা কমিটির আয়োজনে ৫৪তম শহীদ দিবস পালিত হয়।

শহীদদের জীবনীর ওপর আলোচনসভায় সভাপতিত্ব করেন শহীদ বিপ্লবী স্মৃতি রক্ষা কমিটির মনিরামপুর উপজেলার আহবায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সঞ্চালনা করেন সদস্য শেখর বিশ্বাস।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ যশোর জেলা কমিটির সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড তসলিম উর রহমান, বিপ্লবী স্মৃতি রক্ষা কমিটি জেলার বর্ষিয়ান নেতা নাজিমুদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন, আসাদ স্মৃতি সংঘের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওহেদূর রহমান ডেলটা, ২৪ শে ছাত্র আন্দোলনের যশোরের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান, বিপ্লবী নারী মুক্তি পরিষদের জেলা সদস্য জাহানারা মুক্ত, বিপ্লবী যুব মৈত্রী যশোর জেলার অন্যতম নেতা আহাদ আলী মুন্না, আসাদ স্মৃতি সংঘের দপ্তর সম্পাদক লাবু জোয়ারদার, জাতীয় কৃষক খেত মজুর সমিতির জেলার অন্যতম নেতা অনিল বিশ্বাস, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম নেতা রাজু আহমেদ প্রমুখ।

এর আগে শহীদ সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন শহীদ স্মৃতি রক্ষা কমিটির পক্ষে কমরেড নাজিমউদ্দিন, তসলিমুর রহমান, ওয়াহিদুর রহমান ডেল্টা, গাজী আব্দুল হামিদ, সাজেদ রহমান, রাশেদ খান, লাবু জোয়ারদার. বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ এর পক্ষে সম্পাদক তসলিমুর রহমান, নাজিমউদ্দিন গাজী, আব্দুল হামিদ, বিপ্লবী যুব মৈত্রী পক্ষে সেখ আলাউদ্দিন, আহাদ আলী মুন্না, মামুনুর রশিদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর পক্ষে প্রদীপ বিশ্বাস, শিমুল মন্ডল, সায়েম, আবিদ, নাফিস প্রমুখ।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবর পাকহানাদার বাহিনীর হাতে স্বাধীনতাকামী পাঁচ সূর্য সন্তান শহীদ হন মনিরামপুরের চিনাটোলা বাজারের পাশে হরিহর নদীর তীরে। এরা হলেন, কমরেড আসাদউজ্জামান আসাদ, সিরাজুল ইসলাম শান্তি, আহসান উদ্দিন মানিক, মাশুকুর রহমান তোজো এবং ফজলু দফাদার।

তারা বিশ্বাস করতেন, স্বাধীনতা কেবল পতাকা উড়ানোর নাম নয়, এটি হলো অন্ন, বস্ত্র, জমি ও মর্যাদার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।

কমরেড আসাদউজ্জামান আসাদ ছাত্র ইউনিয়নের অগ্রণী সংগঠক, যিনি এম এম কলেজের ছাত্র সংসদের জিএস ও ভিপি হিসেবে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি শ্রমিকশ্রেণীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গ্রামে-গঞ্জে কৃষকের মাঝে সংগঠন গড়েছিলেন।

কমরেড সিরাজুল ইসলাম শান্তি যিনি বিলাশবিহীন জীবনের মধ্যেও আদর্শের অগ্নিশিখা বহন করতেন। ছাত্রজীবনেই তিনি বুঝেছিলেন, সমাজতন্ত্রই মানুষের মুক্তির পথ। শান্তি ছিলেন কৃষক আন্দোলনের প্রাণ, যিনি জমির জন্য, ন্যায্য ভাগের জন্য কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

কমরেড আহসান উদ্দিন মানিক প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বল নাম, যিনি ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি হিসেবে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যূত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পরে শ্রমিক-কৃষকের রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন বিপ্লবের স্বপ্ন নিয়ে।

কমরেড মাশুকুর রহমান তোজো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র, যিনি বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ছেড়ে দেশের মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই তিনি আবার মাটির মানুষের কাছে ফিরে আসেন।

আর ফজলু দফাদার এক সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান, যিনি সেনাবাহিনী ছেড়ে কমিউনিস্ট পার্টির পতাকাতলে শামিল হয়েছিলেন কৃষক-মজুরের মুক্তিযুদ্ধে।

এই পাঁচ শহীদ একই দিনে জীবন দিয়েছিলেন, কিন্তু রেখে গেছেন একটি চিরন্তন বার্তা শোষণমুক্ত সমাজের জন্য লড়াই কখনও বৃথা যায় না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মণিরামপুরে অ’র্ধশত পরিবারের চলাচলের রাস্তা ২ যুগ যাবত বন্ধ রেখেছে বজলুর!

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ একটি দু'টি নই,প্রায় অর্ধশত পরিবারের শতাধিক মানুষের চলাচলের রাস্তা অর্থ ও ক্ষমতাবলে দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি...

দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নিতীশ কুমার

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনা শহরের গান্ধী ময়দানে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে বিহারের...

মণিরামপুর থানা গেট যখন ইঞ্জিন ভ্যান স্টান্ড

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ  ছবিটি একটু দূর হতে দেখলেই মনে হবে এটা মণিরামপুর হইতে ঢাকুরিয়া বা মণিরামপুর টু হোগলাডাংগা বাজারে...

ভারতীয় জলসীমায় অনু প্রবেশের দায়ে গ্রে”প্তার ৭৯ জন বাংলাদেশি ধীবর

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: গতকাল রাতে ভারতের বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় হলদিয়া কাছে বেআইনি ভাবে ভারতীয় জলসীমায় মাছ...