Wednesday, October 15, 2025

যশোর জেলা থেকে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্যের হুক্কা

Date:

Share post:

এস,এম রাকিব রাফসান, ডেস্ক রিপোর্টঃ
যশোরের  জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে  চার যুগ আগেও জনপ্রিয় ধুমপানের একমাত্র মাধ্যম ছিল হুক্কা। আবহমান বাংলার গ্রাম গঞ্জের ধুমপায়ীরা হক্কার মাধ্যমে তামাকপানে অভ্যস্ত ছিলেন। কৃষক শ্রমিক দিনমজুর থেকে শুরু করে জমিদার বাড়ি পর্যন্ত হুক্কার প্রচলন ছিল সর্বত্র। এ  জেলার প্রবীন মানুষেরা এ হুক্কার মধ্যে খুঁজে পান ইতিহাস ঐতিহ্য আর মাটির গন্ধ। সেই সাথে স্থানীয় জমিদার ও বিভিন্ন গ্রামের মোড়লরাসহ এ জেলার কৃষকেরা নানা ভাবে তামাক তৈরী করে হুক্কার টান দিয়ে পরম আনন্দে তৃপ্তির স্বাদ নিতো। আর এতেই ক্লান্তি কেটে পরিতৃপ্ত হতো সবাই। কিন্তুু কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্যবাহী হুক্কা।
প্রায় ৪০বছর আগেও বৃহত্তর মনিরামপুর উপজেলা সহ  প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ঘরে হুক্কার প্রচলন ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তুু এখন এ জেলা উপজেলা এবং গ্রামগুলোতে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবেনা গ্রাম—বাংলার ঐতিহ্যের সেই হুক্কা। এ জেলার বিভিন্ন  গ্রামের বৈঠকখানা গুলোতে বসে পালাক্রমে হুক্কা টানতো বিভিন্ন বয়সের পুরুষেরা। সে সময়ের বিত্তবানদের বাড়িতে ছিল নলের হুক্কা। চেয়ারে গা হেলিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে গৃহকর্তা নলের পাইপ মুখে দিয়ে যখন জমিদারি ভঙ্গিমায় হুক্কায় টান দিতেন তখন এ দৃশ্য পানে অপলক চোখে চেয়ে থাকতেন বৈঠকখানায় আগত মেহমানরা।
তামাক পাতা টুকরো টুকরো করে কেটে চিটাগুড় মিশ্রন করে তৈরী করা হয় হুক্কার প্রধান উপাদান তামাক। মাটির তৈরী কল্কির উপর তামাক রেখে টিক্কায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে নিঃসরিত ধোঁয়া হুক্কার তলনির পানিতে ডুবিয়ে কুড়–ত কুড়–ত শব্দ বের হয়ে আসতো।  তা থেকে একপ্রকার সুগন্ধি ও বের হতো। হুক্কার শব্দে দুর থেকে বুঝা যেত আশেপাশে কেউ হুক্কা টানছে। এখন আর সেই চিরাচরিত পরিচিত দৃশ্যটি চোখে পড়ে না। কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে গ্রাম—বাংলার সেই ঐতিহ্যের হুক্কা।  যুগের সাথে তাল মিলিয়ে হুক্কার স্থান দখল করে নিয়েছে বিড়ি, সিগারেট, হিরোইন, ইয়াবা, গাজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। এসকল বিড়িও সিগারেটের মধ্যে ক্ষতিকর নিকোটিন রয়েছে শতভাগ। তারপরও বিড়ি সিগারেটসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য নেশায় নতুন করে আসক্ত হয়ে পড়ছে লক্ষ লক্ষ উঠতি বয়সের যুবকরা। যাদের নিয়ে সিংহভাগ অভিভাবক সব সময় উদ্বিগ্ন থাকেন। এ ব্যাপারে মণিরামপুর  উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামের বিশ্বনাথ অধিকারি (৮৫) জানান, তিনি একটানা ৫৫ বছর ধরে হুক্কা দিয়ে ধুমপান করেছেন।  সে সময় এলাকার সবাই প্রায় হুক্কা খেতো। এখন হুক্কা ছেড়ে দিয়ে বিড়িও সিগারেট খাই।
এ ছাড়া সদর উপজেলার প্রবীন গফুর গাজী, বিনয় কামার জানান হুক্কা খেলে নাকি সাধারণ সর্দি জ্বর ব্যথা ইত্যাদি রোগ বালাই ও নাকি কম হয়। তিনি আরও জানান তিনি এখনও মাঝে মাঝে হুক্কা খেতে চান, কিন্তু কালের আবর্তে সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠে না।
ফটো: সাংবাদিক আদিত্য অনিক নাজমুল হাসান। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ শুরু হয়েছে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ সকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মগরাহাট পশ্চিমের উস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষে শুরু...

কালিহাতীতে প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত

বুলবুল হোসেন: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ বৃত্তি–২০২৪-এর বৃত্তিপ্রাপ্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর)...

বগুড়া পৌরসভা বিএনপির উদ্যোগে ধানের শীষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ

রিপন বগুড়া প্রতিনিধি: বুধবার সকালে বগুড়া পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান উপস্থাপিত...

রৌমারীতে স্কুল পড়–য়া দু’ছাত্রকে মি”থ্যা চু”রি মা/ম/লা দিয়ে ফাঁ/সা/নোর প্র/তিবাদে মানব”বন্ধন ও বি”ক্ষোভ মি’ছিল

লিটন সরকার রৌমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের রৌমারীতে স্কুল পড়–য়া দু’ছাত্রকে চুরি মামলা দিয়ে ফাঁসানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পালন...