
মোঃ লুৎফর রহমান লিটন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ওরফে চিংকু আমিরুলের নানা অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। আমিরুল তার রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, লুটপাট, পুকুর দখল, মাছ লুটসহ দাপট দেখিয়ে মানুষকে হয়রানির মতো কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগে পূর্বে সে সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউনিয়ন বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা । এখনও থেমে নেই তার চাঁদাবাজী ও প্রভাব বিস্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমিরুলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, লুটপাট, পুকুর দখল, মাছ লুট, অন্যের পুকুরের মাছ বিক্রি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলেও তার ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযোগ রয়েছে, আমিরুল তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য গড়ে তুলেছে তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী তার মধ্যে অন্যতম এক জন সদস্য ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক নেতা বাকিরুল ইসলামসহ রয়েছে ১০/১২ জন সদস্য। সে প্রভাব বিস্তার করে তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে প্রতিপক্ষদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বিভিন্ন সময় অর্থ আদায় করে থাকে।
এছাড়াও মানুষকে বিপদে ফেলে চাঁদাবাজি করে থাকেন এই আমিরুল। এতে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শান্তিপ্রিয় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী জানান, আমিরুলের মতো নেতার কারণে ইউনিয়নে শান্তি-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বিএনপির সুনাম শূন্যের কোঠায় চলে যাবে। তাই সিনিয়র নেতাদের কাছে আমাদের দাবী দ্রুত তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিন। এছাড়াও তার দাপট বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলেও দাবি করেন তারা। তারা আরো বলেন, গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ইং সকাল ১০ টায় ইউনিয়নের দবিরগঞ্জ বাজারে আমিরুল সহ কয়েক জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের দাবীতে ইউনিয়ন বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সম্মেলন করেন। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভির মাহমুদ পলাশ কর্তৃক স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন আপনার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এ বিষয়ে আপনার লিখিত জবাব আগামী তিন (৩) দিনের মধ্যে জেলা বিএনপি’র সভাপতি / সাধারণ সম্পাদক মহোদয় বরাবর জেলা বিএনপি’র দপ্তর বিভাগে প্রদানের নির্দেশ দেন।
কিন্তু কারণ দর্শানোর নোটিশে কি জবাব দিয়েছে তা অদৃশ্য রয়ে গেছে। আমিরুলের খুটির জোর কোথায় এটাই এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্ন।
এলাকাবাসী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির মূলধারার নেতাকর্মীদের একটাই দাবী, রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে তিনি জেনেও আর এলাকায় চাঁদাবাজি, দাপট ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির মতো কর্মকা- না চালাতে পারে এর জন্য অতিদ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেয়া হোক।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আমিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছেন তদন্ত রির্পোট আমার পক্ষে পেয়েছেন।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খ.ম তৌহিদুর রহমান, আমিরুল ইসলামসহ সহ কয়েক জন নেতাকর্মী ইউনিয়নে বিএনপি ভাবমূর্তি খুন্ন করছে। জেলা বিএনপির বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছিলাম। কিন্তু কোন কারণে যে আলোর মুখ দেখেনি আমার জানা নেই। এখন আগের মতই চলা ফেরা করছে চাঁদাবাজী, বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্যক্রক পরিচালনা করছে।