Monday, February 24, 2025

ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককদের নানা অনিয়মের সুযোগ দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের নানা ফাঁদে ফেলে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এই কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা আফিসে। বর্তমানে ঘুষ-দুর্নীতির মহা আখড়ায় পরিনত হয়েছে অফিসটি।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মো. মনিরুল ইসলামের নানা ধরনের ঘুষ গ্রহনের তথ্য। শিক্ষা অফিসারকে ঘুষ দিয়ে অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। বিশেষ করে টাইম স্কেল, আপার স্কেল, বিএড, কর্মচারি নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধির চিঠির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিলেই শিক্ষা অফিসার মোটা অংকের টাকা দাবি করে থাকেন। নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ দেন না।এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চল, খুলনাতে ফাইল না পাঠিয়ে টাকার বিনিময়ে পরবর্তীতে ছাড়েন। বিশেষ করে নতুন এমপিও, পদোন্নতি আর ট্রান্সফার এর ক্ষেত্রে ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় জেলা শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলামকে। চাকুরী করার কারনে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কথা বলতে না পেরে নিরবে ঘুষ প্রদান করে আসছেন অনেক বেসরকারী শিক্ষক ও কর্মচারীরা। কয়েকজন বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষকদের মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) প্রদানের সুযোগ নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ঐ শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও নৈতিক স্খলন জনিত কারণে কোন শিক্ষক অপরাধ করলেও টাকার বিনিময়ে পার পেয়ে যান তিনি। ২০২২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর যশোরে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ধরা খান কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনোয়ার হোসেন অসিম। এরপর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু সেই শিক্ষকের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়।শৈলকূপা উপজেলার দুধসর আব্দুল সোবহান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে তিনি দেড় লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে গোপন সূত্রে জানা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রধান শিক্ষক জানান, টাকা ছাড়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কোন কাজ করেন না। উনার যেমন শরীর তেমন টাকা নেয়। প্রধান শিক্ষকের সাথে একরকম চুক্তি হলেও তিনি সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে আরও বেশি টাকা আদায় করেন। মহেশপুরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডিজির প্রতিনিধি আনতে গেলে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করার পরও তাকে ডিজির প্রতিনিধি না দিয়ে আরো টাকা দাবি করেন। এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্মচারি নিয়োগের ডিজির প্রতিনিধি আনতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।একই উপজেলার বারোপাখিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তিনি তা তদন্তের নামে মোটা অংকের টাকা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলামের মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি টাকা নিয়েছি তার কোনো প্রমাণ আছে? আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাকে কেন টাকা দিবে? এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

কালীগঞ্জের বি’স্ফো’রক মা’মলা’য় কোটচাঁদপুর যুবলীগের সভাপতি ও সম্পাদক গ্রে’ফতা’র

হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে দোড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার...

তাড়াশে ত’থ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দুই সাংবাদিক লা’ঞ্ছি’ত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মাধাইনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। ভুক্তভোগীরা হলেন—দৈনিক...

যশোরে সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতাকে পি’টিয়ে পুলিশে দিলো জ’নতা

কালিগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: যশোরের ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৯ নম্বর বারবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান...

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দি হাঙ্গার প্রোজেক্টের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ব্যুরো চীফ, রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় দি হাঙ্গার প্রোজেক্টের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টায় উপজেলা...