মুহাঃ মোশাররফ হোসেন:
লতিফ একটা কোম্পানিতে জব করে, লতিফের সাথে আছে আরো ৬জন বন্ধু, লতিফের কোম্পানির মহাজন খুব কৃপণ, তার সামনে থেকে একটি টাকাও সরতে দেয় না, এমনকি বুনাছ দিতেও কৃপণতা করে। একবার লতিফ এবং লতিফের বন্ধুরা সবাই মিলে ঠিক করেছে এবার ঈদে কিছুতেই মহাজনের কাছ থেকে ঈদ বুনাছ নিবে না। লতিফ এবং লতিফের বন্ধুরা একসাথে মনে মনে ঠিক করছে দেখি বুনাছ না নিয়ে অন্য উপায়ে চলা যায় কি” কিন্তু অন্য উপায়ে করতে গেলে সেটা আবার ভালো দেখায় না, তার পরেও মহাজনের কৃপণতার জন্য এবং অনিশ্চার সত্যেও সেটা করতে হচ্ছে।
কথায় বলে পিপড়ায় খায় বড় লোকের ধণ, আসলে বাস্তবেও সেটা দেখলাম ঠিক। বড় লোকেরা সামনের থেকে কিছু সরতে দেয় না, কিন্তু পিছন থেকে খাল হয়ে যায়, ঠিক লতিফ এবং লতিফের বন্ধুদের বেলায় সেটা ঘটলো এবং বাস্তবতা বুঝা গেলো। লতিফ এবং লতিফের বন্ধুরা সিদ্ধান্তে অটল থাকার পরেও একটু ভেবে দেখলো যে’ না আমরা যেটা করছি সেটা মনে হয় ভূল হচ্ছে তাই ভেবে তারা আবার সিদ্ধান্ত বদলালো এবং ঠিক করলো কোম্পানি যা দেই তাহা সদরে গ্রহণ করবে এবং কোম্পানিরর কিছু পরিত্যাক্ত মাল বিক্রয় করে তারা পুষিয়ে নিবে, এবং তাই তারা করলো।
কিন্তু কোম্পানির মহাজন বুঝলো আমি জিতলাম, অন্য কোম্পানি বুনাছ বেশি দিয়েছে আমি কম দিয়েছি কিন্তু আসলে সেটা ভাবা ভুল, কারণ শ্রমিকরা যদি ন্যায্যবমুল্য না পায় তাহলে কাজের প্রতি মনোযোগ কম থাকে এবং কোম্পানির তাতে ক্ষতি হয়। শ্রমিকের মুল্য সঠিক ভাবে দিলে কোম্পানির ক্ষতি হয় না বরং আল্লাহ তাতে বরকত দিয়ে দেই, হযরত ফাতেমা রাঃ থেকে বর্নিত হাদিসে আছে যে তোমরা শ্রমিকের সঠিক মুল্য গায়ের ঘাম শুকানোর আগে পরিশোধ করো। এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায় যে শ্রমিকদের ন্যায্য মুল্য সঠিক সময় দিলে আল্লাহ সেই শ্রমিকের মহাজনের ব্যবসায় বরকত বাড়িয়ে দেন। (আমিন)
লতিফ এবং লতিফের বন্ধুরা মিলে এবার আনন্দের সহিত ঈদ করলো। কারণ মহাজন বুনাছ কম দিলেও তারা অন্য উপায়ে পুষিয়ে নিয়েছে তাই। বর্তমান বাজারে দ্রব্য মুল্যের দাম বেশি আর শ্রমিকের সেই হারে ভাতা না পেলে তারাতো একটু পথ ভ্রষ্ট হবেই, কারণ পিছনে দেওয়াল ঠেকে গেলে কি করবে সংসারতো চালাতে হবে। কিন্তু লতিফের এই যুক্তি ঠিক নই এবং লতিফের মহাজনের ও ঠিক না। উচিত হলো সকল কোম্পানিগুলো শ্রমিকের চাহিদানুযায়ী ন্যায্য মুল্য দেওয়া, তাহলে শমিক ও বাঁঁচবে আবার ব্যাবসার উন্নতি ও হবে।
মহাজন যদি সঠিকভাবে বিবেচনা না করে শ্রমিকের মুল্য না দেই তাহলে শ্রমিকের কাছ থেকে শুনাম নিতে পারে না, যেটা ঘটেছে লতিফ এবং লতিফের বন্ধুদের সাথে, কোম্পানির মহাজন মনে করেছে আমি ঠিক করেছি, আসলে সেটা ঠিক হয়নি। কারণ শ্রমিকের বর্তমান বাজারে দ্রব্য মুল্যের দাম বিবেচনা করে ভাতা দেওয়া মহাজনের নফতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। ন্যায্য মুল্য দিলে ন্যায্য ফল আল্লাহু অবশ্যয় দিবেন ইনশা-আল্লাহ।
বড় লোকেরা সামনের থেকে গেলে কষ্ট পায় কিন্তু পিছন থেকে গেলে কিছু টের পাই না, একেই বলে বড় লোকেরা কৃপণ ও হাড় কিপটে। নিজের ক্ষতি বুঝতে কষ্ট হয় অন্যের ক্ষতি চোখে পড়ে না, আল্লাহু যেনো এই সমস্ত কৃপণদের হেদায়েত দান করেন। (আমিন)