শিরোনাম:
শিরোনাম:
ভবদহ এলাকার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত শ্রীনগরে ঈদ -ই মিলাদুন্নবী ( সাঃ) উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল নড়াইল লোহাগড়া উপজেলায় ১০২ জনের নামে মামলা অজ্ঞাত ১৫০ যশোরের  ভারী বৃষ্টিতে বিলহরিণার মাঠে কয়েক হাজার বিঘার ধান পানির নিচে  বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছোট্ট খোকা মাহিম রৌমারীতে নিখোঁজের ২৭ ঘন্টা পর মরদেহ উদ্ধার কেশবপুরে উপড়ে পড়েছে মধু কবির স্মৃতি বিজড়িত “কাঠ বাদাম” গাছটি রৌমারীতে গোসলে নেমে এক ভাই বেঁচে ফিরলেও অপরজন নিখোঁজ পাঁচ চিকিৎসকে চলে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সতীঘাটায় ভারী বৃষ্টিতে ঘরবাড়ি প্লাবিত আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার  মাদ্রাসা নিয়ে কথা বলাই চরম অনিরাপত্তাই আনিস ও তার পরিবার সাংবাদিক সুমনের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় প্রতিবাদ সভা রৌমারীতে গণঅধিকার পরিষদের আনন্দ মিছিল Harmony rally held in Khagrachari BNP will work with people of all religions in hilly areas Wadud Bhuiyan কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল কচুয়ায় বিএনপির যৌথ সমাবেশ অনুষ্ঠিত মাহমুদুর রহমান সোহেল কর্তৃক জোরপূর্বক শরীকের জমিতে বিল্ডিং স্থাপনা মন্ডুমালায় অনুষ্ঠিত হল জামায়াতের কর্মী সম্মেলন এতিম বাপ্পি হত্যার ৪০ দিন পর মিলাদ বিচার চাইলেন এলাকাবাসী গোদাগাড়ীতে ওলামা মশায়েখ ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা সতীঘাটা কামালপুর বিএনপির উদ্দোগে যৌথ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত  নড়াইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ নিয়োগ বাণিজ্যের দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ দফায় দফায় বৈঠক  খুলনায় মামুনুল হক শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি প্রতিশোধের রাজনীতি হরিহরনগর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে সম্প্রীতি সমাবেশ ও শহীদের স্মরণে দোয়া মাহফিলে হাইকোর্টের নির্দেশে পূণরায় নিজ কর্মস্থলে যোগদান রামনগর বিএনপির উদ্দোগে যৌর্থ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত  ভবদহের জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত মানুষের চাপা কান্না কুরআনের আইন

মানুষের কৃতকর্মে বিষাক্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী

উপজেলা / জেলা-প্রতিনিধি / ১৯ বার পড়া হয়েছে
সময় মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

মো. বেল্লাল হাওলাদারঃ

ভালো নেই দেশের মানুষ। একদিকে তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ, বাহিরে কাজে বের হওয়া অনেক লোক হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। আরেক দিকে প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় অনলাইনে খবর ভেসে বেড়াচ্ছে খুন, ধর্ষণ। প্রকাশ্য অশ্লীলতা, অমানবিকতা, অন্যায়, দুর্নীতির খবর। সড়ক দুর্ঘটনা ও আগুনে পুড়ে অনেক মানুষের প্রাণ ঝরেছে। খুব বেদনাদায়ক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবাকে হারিয়ে এতিম হচ্ছে সন্তান। দিশেহারা মা-বাবা সন্তানকে হারিয়ে। ছেলে নেশার টাকা না পেয়ে জন্মদাত্রী মাকে মারধর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা ছেলেকে মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অহরহ ঘটছে অনেক প্রাণহানির ঘটনা। মাদকের টাকার জন্য ছেলে মা-বাবাকে খুন করছে। কি অমানবিক, কি নির্মম ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে পুরো পৃথিবীটা পাপে জর্জরিত। যার ফলে এই পৃথিবী ধীরে ধীরে এগোচ্ছে যেন ধ্বংসের অভিষ্ট লক্ষ্যে!

মহান আল্লাহ আমাদের প্রতি নাখোশ হয়ে মাঝেমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে ফেলেন, যাতে কেয়ামতের যে কঠিন ও ভয়ংকর শাস্তি তা একটু হলেও মানুষ অনুধাবন করতে পারে। শুক্রবার মসজিদে ইমাম সাহেব খুৎবায় বলেছেন, ‘জাহান্নামের আগুনের তীব্রতা মাঝেমধ্যে বেড়ে যায় সে আগুন দুনিয়ায় নিঃশ্বাস ফেলে, যার ফলে দুনিয়ায় তীব্র গরমের সৃষ্টি হয়।’ দুনিয়ার এই গরমের থেকে জাহান্নামের গরম ৭০ হাজার গুণ বেশি। এই দুনিয়ার গরম আমরা সহ্য করতে পারি না, তাহলে কিভাবে জাহান্নামের আগুন সইবো! এই ভাবনাটা মানুষ জ্ঞানী হওয়া সত্বেও মনে ভাসে না। মহান আল্লাহর সৃষ্টির আঠারো হাজার মাখলুকাতের মধ্যে সব থেকে জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেচনা মানুষকে দান করেছেন।

স্বাধীনতা দিয়েছেন, ভালো মন্দ পরখ করার ক্ষমতা দিয়েছেন। দুনিয়া ও আখেরাতের সম্পর্কে প্রতিটি মানুষ জানেন বোঝেন, তারপরও মানুষ মন যা চায় তাই করে! লোভ-লালসা-কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার শয়তানি বুদ্ধি কিছু মানুষকে প্রতি মুহূর্তে প্ররোচিত করতে থাকে। মানুষকে যদি মহান আল্লাহ স্বাধীনতা না দিতেন তাহলে এত অন্যায়, ব্যভিচার, খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি, হিংসা বিদ্বেষ, লোভ- লালসা, ফেৎনা-ফ্যাসাদ থাকতো না। নিষ্পাপ মানুষ নশ্বর পৃথিবীতে বসবাস করত আল্লাহর এবাদত বন্দেগীতে। চলমান মানুষের কৃতকর্মে পৃথিবীর বাতাস ক্রমেই বিষাক্ত হয়ে উঠছে। যার ফলশ্রুতিতে যে গতিতে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তাতে অচিরেই বিশ্ব ভয়াবহ সংকটে পড়তে পারে।

বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রচুর গরম, এমনি মানুষ পানি খেয়ে তৃষ্ণা মিটাবে সেই সুপেয় পানির অভাব তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে । অসহনীয় তাপপ্রবাহে বেঁকে যাচ্ছে রেলের পাত। অসহনীয় গরম আর অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনায় মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করে বিশেষ মোনাজাত করা হচ্ছে। সিলেট ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস পাওয়া যায়নি। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে মে মাসের ২/৩ তারিখ থেকে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মহান আল্লাহ সহায় হলে এই অশান্ত, অস্থির, পাপেভরা পৃথিবীকে রহমতের বৃষ্টি দিয়ে ধুয়ে মুছে দিতে পারেন।

বাইরে বের হওয়া মানুষগুলোর কাছে দিনের বেলায় সব কিছুই ফুটন্ত কড়াইর মতো। শুধু মানুষ নয়, হাঁসফাঁস অবস্থা প্রকৃতিরও! শাহবাগ মোড়ে এক রিক্সাওয়ালার শরীর থেকে রোদের তাপে ঘাম বেয়ে বেয়ে পড়তে দেখে তাকে বললাম একটু জিরিয়ে নিন ভাই। রিক্সাওয়ালা খুব আক্ষেপের সুরে বললেন কোথায় জিরাবো.? রোডের পাশে কোথাও গাছ আছে? যাও দু’এক জায়গায় গাছ আছে তা ছোট ছোট চায়ের দোকানদার দখল করে ফেলছে। আমাদের কোথাও দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই। সামনে তাকিয়ে দেখলাম রিক্সাওয়ালা তো ঠিক কথাই বলছে।

শাহবাগ জাদুঘরের সামনে আইল্যান্ডের উপরে ছোট ছোট দুটো গাছ বেশ ডালপালা ছড়িয়ে আছে তার নিচে কয়েকটি চা স্টলদোকানিরা চা বিক্রি করছে। পথচারীরা শীতল পরিবেশে গাছের ছায়ায় বসে চা পান খাচ্ছে। রিক্সাওয়ালারা যাবে কোথায়? ঢাকা কিংবা ঢাকার বাহিরের শহরের দিকে তাকালে দেখা যায় শহরের অধিকাংশ ফুটপাত দখলদারেরা ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। কথা হয় ইসরাফিলের সঙ্গে, সে লালমনিরহাট জেলা থেকে এসে ঢাকায় রিক্সা চালায়। দৈনিক বাংলা মোড় থেকে তার রিক্সায় চড়ে সচিবালয়ে যাচ্ছিলাম যেতে যেতে বলেন এতো রোদে তাপ; যে গরম তাতে রোডে বের হওয়া অনেক কষ্টের। না বের হয়েও পারি না। রিক্সা না চালালে না খেয়ে মরতে হবে। কি বলবো এই গরম মানুষের পাপের কামাই।’

গাছ-গাছালি, নদ-নদী, খাল-বিল মহান আল্লাহর অনিন্দ্য সৃষ্টি। গাছের সঙ্গে মানুষের জীবনপ্রবাহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাণিদের বেঁচে থাকার জন্য গাছের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যিক। কারণ, সবুজ পাতায় ছেয়ে থাকা বৃক্ষ প্রাণে শিহরণ জাগায়। শহরে কিংবা গ্রাম্য রাস্তায় রিকশা-ইজিবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানরিকশা নিয়ে বের হয়ে তারা ঘেমে একাকার হয়ে যায়, একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে থাকে। ঝিরঝির হিমেল বাতাসে দেহ-মন জুড়িয়ে আসে। অথচ আমরা সেগুলো দিন দিন নিষ্ক্রীয় করে দিয়েছি। যার ফলে, দেশে দিন দিন নদ-নদীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, ভরাট করে সবুজ কর্তন করে গড়ে উঠেছে শহর। শহরের জলধরগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। পার্ক-মাঠ ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। মাঠ ও পার্কগুলো যেভাবে দখল হচ্ছে এতে সবুজের পাশাপাশি ওপেন স্পেস কমে যাচ্ছে।

এখন রাজধানী ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদী প্রাণহীন।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদীগুলোতে মাছ নেই, স্রোত নেই, পলি জমে গেছে। পদ্মার দিকে তাকালে বলে দেওয়া যায় নদীর কি অবস্থা।
স্বচ্ছ পানির কলকল ঢেউ আর নদীর বুকে দেখা যায় না। বুড়িগঙ্গা এখন কালো দুর্গন্ধযুক্ত দূষিত পানির এক নিথর মরা নদী । নাব্য সংকট, বিভিন্ন কল-কারখানা ও ট্যানারির দূষিত বর্জ্য, কিছু মানুষের অবৈধ দখল, ঘর গৃহস্থালীসহ অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা স্তুপ করে নদীতে ফেলা ইত্যাদি কারণে প্রতিনিয়ত বুড়িগঙ্গার পানির দূষণ বেড়েই চলেছে। সেই সাথে এক সময়ের প্রাণচঞ্চল স্রোতস্বিনী বুড়িগঙ্গা নদী এখন প্রাণহীন এক মরানদীতে পরিণত হয়েছে। এভাবে দেশের অনেক নদ-নদী হারিয়ে যাচ্ছে। এমন যদি চলতে থাকে তাহলে এদেশে এক সময় পানির সংকটে পড়বে তীব্র ভাবে। শীতল আবহাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে মানুষ হাহাকার করবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, সবুজ নিধন, জলাধার নিধনের কারণে আমাদের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আর থাকছে না। ফলে প্রতিবছর তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হচ্ছে। অপরিকল্পিত প্ল্যান করে একটি বিল্ডিংয়ের সঙ্গে আরেকটি বিল্ডিং জোড়া লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে, এতে শহরের বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর থেকে বেরিয়ে এসে পরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ গড়ে তোলা জরুরি।

খবরে দেখলাম, তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, তখন দেশের সচেতন নাগরিকরা গাছ লাগানোর পক্ষে ক্যাম্পেইন করছেন। ঠিক এই সময়েই দেশের নানা জেলায় কেটে ফেলা হচ্ছে হাজার হাজার গাছ। ব্যক্তিপর্যায় বা কোনো দস্যূদের কাজ না, স্বয়ং বন বিভাগ মেতেছে এই ধ্বংসযজ্ঞে। এটা একটা অমানবিকতা। আবার তারাই স্লোগান দেয় ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।’ ভাবতে হবে গাছ আমাদের ছায়া-অক্সিজেন দানসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে সুরক্ষা দেয়। ফলে নির্বিচারে গাছ কর্তনে সামাজিক বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকা অবশ্য অবশ্যই উচিত। পরিবেশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়রোধে গাছের কোনো বিকল্প নাই। যত্রতত্র গাছ কাটা জনজীবনসহ পরিবেশের জন্য চরম হুমকি।
আসুন আমরা আমাদের বুদ্ধিমত্তার ওপরও জুলুম না করে সুন্দর সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলার চিন্তা করি। বর্ষার মৌসুমে বেশি বেশি গাছ লাগাই। নদী-মাতৃক দেশ আমাদের তাই নদী রক্ষার্থে এগিয়ে আসি। আমাদের কৃতকর্মে পৃথিবীর বাতাস বিষাক্ত না হয় আর সেদিকে দৃষ্টি রাখি। ভালো কাজে পরিবর্তন করি দেশ ও সমাজ।

লেখক: মো. বেল্লাল হাওলাদার
কবি, সাংবাদিক ও সংগঠক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

একাধিক নিউজ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: Content is protected !!