নড়াইলে পুলিশ সুপারের সাথে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

লেখক: Champa Biswas
প্রকাশ: 1 year ago

সাজ্জাদ তুহিন,নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইল জেলা পুলিশ সুপারের সাথে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ই জুলাই (শনিবার) লোহাগড়া উপজেলা থানা পুলিশের আয়োজনে দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজকরা প্রধান অতিথি কে ফুল দিয়ে বরন করে নেন।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ দোলন মিয়া, ডিআইও-১, জেলা বিশেষ শাখা মীর শরিফুল হক, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ওসি) মোঃ সাজেদুল ইসলাম, লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসির উদ্দিন, দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক শেখ মাসুদুর রহমান,

দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান সরদার, নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আমজাদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, দিঘলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার সাহা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে পু্লিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয়ের উপর দিক নির্দেশনা মুলক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন,

১। আধিপত্য বিস্তারঃ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন, জখম, অঙ্গহানি, বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্টকরণ ইত্যাদি ঘটনা ঘটছে। এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

২।গ্রাম্য কাইজ্যাঃ তুচ্ছ এবং ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে গ্রামভিত্তিক হানাহানি, খুন-জখম ও লুটতরাজের মতো ঘটনা প্রায়শঃই ঘটে। আপনারা যারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গ্রাম্য পর্যায়ে নেতৃত্বে আছেন তাদের দায়িত্ব হবে এসব গ্রাম্য কাইজ্যা নিরসন করা।

৩। দলীয় গ্রুপিংঃ একই দলের মধ্যে নেতৃত্ব ও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে বিভাজিত হয়ে একদল অপর দলের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। দলীয় গ্রুপিং বন্ধে আপনাদের ভূমিকা রাখতে হবে।

৪/ সামাজিক ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বঃ এরূপ দ্বন্দ্বের কারণে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতিসহ মামলার উদ্ভব হচ্ছে। ফলে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুধীজন, মুক্তিযোদ্ধা যারা আছেন তাদের এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে।

৫। মাদকঃ এলাকায় মাদক রোধ ও নির্মূলকল্পে পুলিশকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। এলাকায় মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের সংখ্যা নগণ্য। তাদের চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কটসহ তাদের সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করুন। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি।

৬। জুয়াঃ অত্র এলাকায় জুয়ার প্রবণতা রয়েছে। ফলে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ জুয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিতপূর্বক জুয়া নির্মূলে পুলিশকে অবহিত করুন।

৭। ইভটিজিংঃ ইভটিজিং রোধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকবৃন্দ তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের ও অভিভাবকবৃন্দ তাদের সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলবেন। এরূপ ক্ষেত্রে পুলিশকে অবহিত করুন।

৮। মানব পাচারঃ বিভিন্ন প্রলোভনে মানব পাচারের ন্যায় অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে।অপরিচিত বা পরিচিত ব্যক্তির দ্বারা আপনার সাথে সংগতিপূর্ণ নয় এরূপ প্রস্তাবে রাজি না হওয়া এবং উক্ত ব্যক্তিদের অসৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করুন।

৯। নারী নির্যাতন ও বহুবিবাহঃ নারী নির্যাতন ও বহুবিবাহ রোধে পুলিশকে অবহিত করুন।

১০। সামাজিক অবক্ষয়ঃ ডিজিটাল যুগে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়াইফাই/নেট ব্যবহার করার ফলে মোবাইলের মাধ্যমে পর্ণোগ্রাফিসহ বিভিন্ন বাজে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা খারাপ পথের দিকে ধাবিত হচ্ছে। প্রেম-ভালোবাসা, পরকীয়ার মাধ্যমে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করছে। এসব অপরাধ প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হতে হবে।

১১। থানা কেন্দ্রিক সকল সেবা: অনলাইন জিডি, অভিযোগ ও মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সেবা প্রার্থীকে হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ে সেবা প্রার্থীর কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান করা হয়।

১২। পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ভিআরঃ অত্র নড়াইল জেলার পাসপোর্ট, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ভিআর দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ডিএসবি নড়াইল সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এছাড়া অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্ত সকল সমস্যা জন্য হটলাইন নাম্বার (০১৩২০১৪৬১৩৬) চালু করা হয়েছে। এসকল বিসয়ে আপনারা পুলিশ প্রশাসন কে তথ্য দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।

error: Content is protected !!