জাবির আহমেদ জিহাদ:
ছেলেবেলার মহুর্তগুলো ছিলো অসাধারণ ; অস্থির!আজ হঠাৎ এই কঁচিকাঁচা থাকা কালীন সময়ের কথা মনে পড়ে গেলো, কল্পনার মতো লাগলো উদ্ভিদটার দেখা পেয়ে।হ্যাঁ! এইতো বিস্তারিত জানাচ্ছি, একটু সবুর করে পড়েই দেখা যাক না।
মার্চের ১ তারিখ (শুক্রবার)। আজ হলের বন্ধুরা সবাই ফ্রি।জুম্বার নামাজ শেষ করে কিছুটা ঘুমের সাগরে ডুব দেয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।এমন সময় হঠাৎ দরজায় বারি পড়ছে।ঠক্! ঠক্!ঠক্! চলতেই থাকলো। ওহ্ বিরক্ত! ঘুমের ঘোরে কেউ ডাকলে বিরক্ত লাগবেনই না বা কেন!
আজ শুক্রবারের একটা দিন ক্লাসও নেই,তাজা ঘুম ভাঙলে কেমনডা লাগে বলুনতো?খুব বিরক্ত! খুব বিরক্ত!
আমার পাশের ব্যাটের বন্ধু সাঈদকে মিনি মিনি করে বললাম দেখতো কোন বিয়াদব পুলা এমন করছে! বলতে না বলতেই আবারো ঠক! ঠক! ঠক!আহা! বিরক্ত! বিরক্ত! কে শুনে কার কথা।
বাধ্য হয়ে দরজাটা খুললাম।আই এম তো অবাক!আমাদের সিনিয়র ভাই আতিক।কিছু বলার সাহস আর হলোনা। বড় ভাই বলে কথা।তবুও একটা লম্বা সালাম দিলাম, আসসালামু আলাইকুম…….!ভাই!
জিহাদ চলো ইপিজেটে ঘুরতে যায়! আজ তো তোমরা ফ্রি আছো চলোইনা!অনেক মজা হবে।তোমার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে নিচে আসো?একথা এক নিশ্বাসে বলেই আতিক ভাই থেমে গেলেন। ঠিক আছে ভাইয়া!আসছি। বড় ভাইয়ের সাথে উল্টা-পাল্টা বললেও আবার বিপদ!তাই কিছু আর বললাম নাহ!
রুমের সবাইকে ডেকে নিলাম, উঠ! উঠ! উঠ! সবাইতো আমার দিকে রাগান্বিত হয়ে তাকিয়ে আছে।অসময়ে ডাকার মানে কি! তাজা ঘুম ভাঙি দিলি। সাঈদ একথা বলে সবাইকে ঘোষণা দিলো জিহাদরে ধর তোরা! ওর আজ খবর আছে।
সবাইতো আমার দিকে জুতা,ঝাড়ু নিয়ে এগোচ্ছে। থাম তোরা আতিক ভাই তোদের ঘুম থেকে তুলতে বলেছে।বড় ভাইয়ের নাম শুনে আমার প্রতি রাগ কিছুটা কমলো।
আমাদের রুম থেকে সাঈদ, তুর্জয় ও আমি বের হলাম বড় ভাইদের সাথী হয়ে সফরে।
রিক্সা নিলাম! গ্রন্তব্যে পৌছতে লাগে ১০ টাকা ভাড়া।ভাইয়ারা সবার টাকা দিয়ে দিলেন।
রিক্সা থেকে ইপিজেটের পিছন দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম।জীবনের ফাস্ট এখানে আসা।
দেখি গোল চত্ত্বর!চত্ত্বরের ভেতরে দেখলাম বেশ কয়েক’খান অদ্ভুদ অদ্ভুদ গাছ।খুব পরিচিতি মনে হচ্ছে।সবাই মিলে ঢুকে পড়লাম ভেতরে।গাছটা চেনা চেনা লাগছে ঠিকই! কিন্তু নামতো জানিনা! বন্ধু, বড় ভাইদের জিজ্ঞাসা করলাম ‘ কেউ কিছু বলতে পারে না।
হঠাৎ তুজর্য়ের মনে পড়ে গেলো এ গাছের রস আর তুব্লা ঘাষ দিয়ে ছোটোবেলায় কত খেলেছি।ফুটকা ফুঁটিয়েছি।
মহুর্তেই সবার স্মরণে চলে এলো।মনে পড়ে গেলো ছেলেবেলার স্মৃতির পাতা।যে যার মতো ফুটানো শুরু করলো অজানা এই গাছের রস দিয়ে ফুটকা ফুঁটানো!! আহা! কি মজা! আহা!
আমাদের সবার মনেই এক আনন্দ বিরাজ করা শুরু করলো এ সময়।যেন সোনালী ওই দিনে ফিরে এসেছি সবে। ছেলেবেলা!! ছেলেবেলা!! আহা! ছেলেবেলা।