মোঃ বুলবুল হোসেন:
তুমি বলতে চাও যে তুমিটা ভীষণ আপন। মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে নদী বলল, তুমি আমার সাথে কখনো রাগ করবেনাতো আবদারের সুরে বলল। সাগর হেসে বলে,বেশ তো আমার ময়না । এবার চলো খেয়ে নেবে। নদী হেসে বলে তুমি খাবে তো আমার সঙ্গে। সাগর হেসে বলে,কখনও এমন হয়েছে তোমাকে ছাড়া আমি আর আমাকে ছাড়া তুমি খেয়েছো। হেসে ঘাড় নেড়ে হাঁ করে। সাগর ওকে খাইয়ে দেয়। তারপর নিজেও খেয়ে নেন । খাওয়া দাওয়া শেষ বিশ্রাম নেয়। এই নদী ওঠো না। দেখো বাইরে কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। চলো আমরা বৃষ্টিতে ভিজি ।নদী বলে, আচ্ছা এক কাজ করলে কেমন হয়। সাগর বলল, কি কাজ বলো তুমি ভিজবে আমি ছবি তুলবো। ওকে তুমি যেটা ভালো মনে কর।এদিকে নদীর আর সহ্য হচ্ছে কিন্তু দরজা বন্ধ। রাগে জানলার কাঁচটা ভাঙতে যায়। সাগর বকা দেয়। আহ, কি হচ্ছে নদী আঘাত পাবে তো।খাওয়া-দাওয়া শেষে সাগর ঘুমিয়ে পড়ে।এরই মধ্যে হঠাৎ নদী এসে বলে, চলো আমরা ছাদ থেকে ঘুরে আসি। সাগর বলে,খালি পাগলামী। কোথায় দরজা বন্ধ?এই তো খোলা । আমি ভেতরে এলাম কি করে? সাগর বলল, তোমার বাবা আমাকে অনেক মেরেছে। নদী বলে দেখি কোথায় মেরেছে। সাগর এই দেখো কিভাবে মেরেছে। সারা গা হাত পায়ে যন্ত্রণা করছে। মাথাটা এখনও ব্যথা করছে।
সাগরের এই অবস্থা দেখে নদী কাঁদতে কাঁপতে বাসায় চলে আসে বাসায় এসে কান্নাকাটি করে। এদিকে সাগরের মনটাও ভালো নেই, তাই রাতে সাগর নদী রুম চলে আসে।নদী বলল,তবে এলে কেন?চলে যাও।”সাগর হেসে বলল,ধ্যাৎ। তাই হয় নাকি। তোমায় ছেড়ে আমি কোথাও যেতে পারি। চলো ছাদে চলো বসে গল্প করি। কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে দেখবে চলো। আজ ফাল্গুনী পূর্ণিমা যে। সাগর ও নদী চুপিচুপি ছাদে আসে। কি সুন্দর জ্যোৎস্নার আলো চারিদিকে। নদী আনন্দে গান গায়, নাচে। তারপর নাচতে নাচতে ছাদের একপাশে চলে যায়। সাগর বকা দেয়,বলে এই চলে এসো বলছি। তুমি যদি পড়ে যাও আমার কি হবে।নদী তোমার বাবা কেস করবেন বলে ধমকায়। এরপর তারা ছাদ থেকে নেমে এসে সাগর বাসায় চলে আসে।এবার ও নদীর বিয়েতে গিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয় সাগর। বিয়ে ভাঙ্গার অপরাধে কি মারটাই না মেরেছিল নদীর বাবা আর নদীর ভাইয়েরা। সাগরকে এতো মার মেরেছে মাইর খেয়ে শেষে সাগর মারা গেলো। সাগরের মৃত্যুর কথা শুনে নদী পাগল হয়ে যায়। নদী কে পাগল করে রেখে গেলো। পাগলা গারদের আয়া কে নদী তখনও বলছে। সাগর খেয়েছিলো তো কাল রাতে। তারপর নদী বলে, সাগর খাও এই বলে কত ভাত মেঝেতে ছড়াচ্ছিল। তারপর নদী বলে সাগর চলো আমরা বৃষ্টিতে ভিজতে যাবো। তাও জানলার কাঁচ ভেঙে। হাসপাতালে লোকজন নদীকে জোর করে এনে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
আসলেই নদী ঘুমিয়ে ছিলনা। কিছুক্ষণ পড়ে আয়া এসে দেখে নদী তার রুমে নেই। হাসপাতালে লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছাদে চলে যায়। ছাদে গিয়ে দেখে কোথাও নেই নদী ।হঠাৎ নিচে খেয়াল করে দেখে অনেক মানুষের ভিড় জমিয়েছে। হাসপাতালে সকল লোকজন নিচে চলে যায়। তারা দেখতে পায় নদীর লাশটা পড়ে আছে। নদীর বাবাকে ফোন দেওয়া হয়। নদীর বাবা এসে কান্নাকাটি করে। পরবর্তীতে ডাক্তার নদীর বাবাকে বললেন,কি লাভ হলো আপনার। জানতেন যখন নদী ও সাগর মধ্যে প্রেমে ছিল।পাগল দুটো কে বিয়েটা দিয়েই দিতেন। সাগর তো ভীষণ ভালো বাসতো নদী কে। আর নদী তো সাগরের প্রেমে পাগল হয়ে প্রাণটাই খোয়ালো। আমরা বড়রা বলুন তো কেনো, আমাদের ছেলে মেয়েদের প্রেম মেনে নিতে পারি না। হয়তো অনেকেই প্রেমে পাগল হয়ে থাকে । আজকে যদি আপনি তাদের প্রেমটা মেনে নিত তাহলে হয়তো এমন হতো না। প্রেমে পাগল ছিল বলেই না সাগর ও নদী প্রেমে জন্য প্রাণটাও দিয়ে দিয়েছে। কারণ সাগর চলে যাওয়া দিন নদী মেনে নিতে পারেনি। আসলেই নদী অনেক আগেই সুস্থ হয়ে গিয়ে ছিলো।