দিরাই উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের হাওরবেষ্টিত ভাটির উপজেলা দিরাই শাল্লাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা- মহাসড়কের
অসম্পুর্ণ (জেড-২৮০৭) দিরাই-শাল্লা অংশে ৬২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকার পুনঃনিমার্ণ কাজের শুভ সূচনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত এমপি।
রবিবার বেলা ১২ টায় দিরাই শাল্লা সড়কের রাধানগর ( তিন রাস্তার মোড়ে) দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত স্বপ্নের সড়কের পুনঃনির্মাণের
শুভ সূচনা উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা বলেন, হাওর এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘবে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং আমার স্বামী প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষ ইচ্ছা পুরণ করছেন বলে আমি উনাকে হাওরবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। হাওরবাসীর স্বপ্নের বাস্তবায়ন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়কটি নিঃসন্দেহে আমাদের এলাকার দুই উপজেলার যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। এটি শুধু অত্র এলাকায় নয়, এ সড়কটি বাস্তবায়িত হলে নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ বানিয়াচং ও কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলাকেও সংযুক্ত করবে। আমি দিরাই-শাল্লাবাসীর আশীর্বাদে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকেই এই সড়কটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলাম আজ এর সুফল পেয়েছি ।
এসময় এলাকার সর্বস্তরের নেতাকর্মী সড়ক বিভাগের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা সহ প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
হাওরের তলানির উপজেলা শাল্লার প্রায় দুই লাখ মানুষ একযুগ আগে স্বপ্ন দেখেছিলেন সারাদেশের সঙ্গে সড়কে সংযুক্ত হবেন। ২০১১ সালে সড়কের কাজও শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালে শেষ হবার কথা ছিল সড়কের কাজ। সে সময় কাজের ৯২ কোটি টাকার বিলও উত্তোলন হয়েছিল। কিন্তু সড়কটি যান ও জন চলাচলের উপযুক্ত হয়নি। এই সড়কের অনেক অংশ হাওরের আফালের ঢেউয়ে বিলীন হয়ে অসম্পূর্ণ অবস্থায় ছিল।
হাওর এলাকায় অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন হচ্ছে সুনামগঞ্জের-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা আঞ্চলিক মহাসড়ক। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারভিত্তিক হাওর এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। তাহিরপুরে ২০১০ সালে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এই সড়কটি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রকল্পের আওতায় সড়কটি নির্মিত হলে সুনামগঞ্জ-দিরাই- শাল্লা-আজমিরীগঞ্জ ও হবিগঞ্জের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। প্রকল্প এলাকাটি কৃষি ও মৎস্য শিল্পপ্রধান হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী দ্রুত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা সম্ভব হবে।
গত বছরের ১৮ মে এবং ১৯ জুন দিরাই-শাল্লা সড়ক সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রস্তাবনা দেন বিশেষজ্ঞরা। সেই প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপদ সেতু মন্ত্রণালয় সড়কটির পুনঃনির্মাণের জন্য ৬২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অনুমোদন দেন। সেই কাজের শুভ সূচনায় এলাকাবাসী আনন্দিত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে অভিনন্দন জানান । এতে প্রয়াত জাতীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষ ইচ্ছে উনার সহধর্মিণী ড.জয়া সেনগুপ্তার হাত ধরে হচ্ছে বলে এলাকাবাসী আনন্দ উল্লাস করছে। এবিষয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পীযুষ দাশ বলেন, জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষ ইচ্ছা ছিল দিরাই-শাল্লা সড়কটি বাস্তবায়ন করার। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি জীবদ্দশায় তিনি এটি দেখে যেতে পারেননি। উনার সহধর্মিনী সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তার প্রচেষ্ঠায় ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কারণে আজ
সড়কের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে এতে
প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়ন ও স্বপ্ন পূরণের হচ্ছে । এজন্য আমি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান ও আমাদের সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা কে অভিবাদন জানাচ্ছি।