ভারত থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম:
দীর্ঘদিন ধরে নিজের স্বামীর সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবার থানার বাসুল ডাঙ্গা অঞ্চল এর বাসিন্দা টুসু বিবি। কিন্তু তার স্বামীর আগের পক্ষের স্ত্রী ছিল তা আগে থেকেই জানতেন না। বিশ্বাস করে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন মগরাহাট থানা র উত্তর কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে ইব্রাহিম সেখ এর পুত্র আলীনুর সেখ এর সাথে। তাদের মধ্যে ইসলামী রেজিস্ট্রার করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দীর্ঘদিন ধরেই ধরে তাদের মধ্যে কোন বনিবনা র অসুবিধা হয়নি। কিন্তু যখন টুসু বিবি জানতে পারলেন যে তার স্বামী আলীনুর সেখ এর প্রথম পক্ষের স্ত্রী রয়েছে।
তখন থেকেই গোল বাঁধলো। এবং নিজের ভবিষ্যৎ ও অধিকার নিয়ে স্বামীর বাড়িতে গেলে সেখান থেকে বিতাড়িত করে দেন আলীনুর সেখ এর প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং তার ছেলে ও মেয়েরা। অসহায় অবস্থায় তিনি তার অধিকার নিয়ে ছুটে যায় উত্তর কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে বহিরগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য র কাছে। তিনি বিচার করে দেন যে কোন ভাবেই যেন টুসু বিবি কে অবহেলা না করে হয়। তার পর টুসু বিবি যখন তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসতে চায় তখন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় প্রথম পক্ষের স্ত্রী। দুই জনের মধ্যে মারপিট ও ঝামেলা শুরু হয়। এবং নিজের ভবিষ্যৎ ও অধিকার পেতে ছুটে যায় উত্তর কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মাসকিনা মমতাজ এর কাছে।
তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেন বহিরগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য কে। কিন্তু তার বিচার না মানার কারণে টুসু বিবি অভিযোগ করেন ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ অধীনে উস্তি থানার ওসি আসাদুল সেখ এর কাছে। এবং তিনি মানবিক ভাবে টুসু বিবি র বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। এবং উস্তি থানার ওসি আসাদুল সেখ, তিনি তার সাধ্যমতো সাহায্য করেন। এবং আইনি পরিসেবা দেবার আশ্বাস দেন। এর পর টুসু বিবি র স্বামী তার বাপের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে এবং তার মধ্যে তার গর্ভে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সেই কন্যা সন্তান নিয়ে তার ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করার জন্য তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন।
শুরু হয় তুমুল ঝগড়া ও মারপিট। এবং এই মার এমন পরিস্থিতি দাঁড়ায় যে টুসু বিবি কে আক্রমণ করতে আসা আলীনুর সেখ এর পরিবারের সদস্যদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ছুটে যায় তার ভায়ের বাড়ি ইসমাইল সেখের বাড়িতে। তখন রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা।ঘুমন্ত অবস্থায় টুসু বিবি কে ও তার কন্যা সন্তান কে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তার দেওর সাবির সেখ ও তার পিতা। কিন্তু টুসু বিবি কে আঘাত করতে গিয়ে লাঠি গিয়ে পড়ে সাব্বির সেখের মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি তার স্ত্রী হাজরা বিবি কে নিয়ে স্থানীয় বানেশ্বর পুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং সাব্বির সেখের মাথায় মোট আটটি সেলাই পড়ে। এবং আলীনুর সেখ এর বিরুদ্ধে উস্তি থানায় অভিযোগ করেন। এবং উস্তি থানার ওসি আসাদুল সেখ এর নির্দেশ মেনে অভিযুক্ত আলীনুর সেখ কে গ্রেপ্তার করে। এবং তাকে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের আদালতে হাজির করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে নিজের ভবিষ্যৎ ও সামনে বিপদ থেকে রক্ষা পেতে এবং টুসু বিবি র স্বামী কাছ থেকে অধিকার পেতে তিনি পশ্চিম বাংলা বিধান সভার সদস্য ও ডায়মন্ড হারবার পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং তৃনমূল দলের জেলা নেতা শ্রী পান্নালাল হালদার কাছে আসেন।
সেই সঙ্গে ছুটে যান ডায়মন্ড হারবার জেলা তৃণমূল দলের সভানেত্রী মনমোহনী বিশ্বাস এর কাছে।তারা টুসু বিবি কে মানবিক ভাবে সহযোগিতা করবে বলে জানান।এর পর আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য কোন আর্থিক সাহায্য না পেয়ে ছুটে আসেন ডায়মন্ড হারবার জেলা আদালতে র বার কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও তৃনমূল দলের নেতা আবুল হাসান সেখের কাছে এবং উস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও ডায়মন্ড হারবার জেলা আদালতের এ্যাডভোকেট মিকাইল মোল্লা কাছে।তারা টুসু বিবি কে মানবিক সাহায্য এবং বিনা খরচায় আইনী সহায়তা প্রদান করবেন বলে জানিয়েছেন। এবং তার স্বামীর কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাবার জন্য সবধরনের আইনী সহায়তা করবে বলে জানান।
এমন অসহায় এবং গরীব মহিলার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে ও তার আইনী সহায়তা ও অধিকার পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিরলতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, ডায়মন্ড হারবার জেলা আদালতের এই দুই আইনজীবী। এমন ঘটনা খুব কম শোনা যায় এবং দেখা যায় ভারতবর্ষে।