সিরাজগঞ্জে জিম্মি হওয়ার ৬৭ দিন পর বাড়ি ফিরলেন   নাবিক নাজমুল হক

লেখক: লুৎফর রহমান লিটন
প্রকাশ: 6 months ago

মোঃ লুৎফর রহমান লিটন :
সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকাবস্থায় যখন বাড়িতে কথা বলার সুযোগ শেষ হয়ে গিয়েছিল তখন মনে মনে ভেবেছিলাম বাবা-মায়ের মুখ আর দেখতে পারবো না। তখন নামাজ পড়তাম আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতাম হে আল্লাহ তুমি আমাদের বাবা-মায়ের বুকে ফিরিয়ে দাও।
বুধবার (১৫) সকালে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৭ দিন পর বাড়ি ফিরে মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে এ কথা বলেন নাবিক নাজমুল হক।
তিনি বলেন, এই আনন্দের প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই। বাড়িতে ফিরতে পেরেছি, পরিবারকে কাছে পেয়েছি।
অনেক ভালো লাগছে। বেশ কিছুদিন বাড়িতে থাকবো।
কোরবানি ঈদের পর আবারও জাহাজে ফিরবো।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে উপজেলার চর নূরনগর গ্রামের আবু সামা ও নার্গিস খাতুন দম্পত্তির ছেলে নাজমুল হক। তিনি বাড়ি ফিরলে পরিবার, আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামবাসী তাকে বরণ করে নেয়। তার ফেরার মধ্য দিয়ে স্বজন-পরিবারের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।
মা নার্গিস খাতুন বলেন, আল্লাহ আমার বুকের মানিক কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমার আর কোনো কিছু চাওয়ার নেই। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে যে সব মানুষ সাহায্য করেছেন সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এদের মধ্যে বন্দি জাহাজের ক্রু হিসেবে ছিলেন নাজমুল হক। জাহাজটি অপহরণের পর থেকে নাজমুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় চলেছিলেন মা-বাবা, বোনসহ স্বজনেরা। প্রায় এক মাস পর গত ১৪ এপ্রিল ভোরে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এরপর জাহাজটি পৌঁছে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে।
সেখান থেকে মিনা সাকার নামের আরেকটি বন্দরে চুনাপাথর ভর্তি করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সব মিলিয়ে ৬৫ দিন পর মুক্ত নাবিকরা বাংলাদেশে ফিরেছেন।
error: Content is protected !!