ডেস্ক রিপোর্টঃ
সারাদেশে প্রচন্ড তাপদাহের সাথে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন হাট-বাজারে তালশাঁস বিক্রিতে ব্যস্ত আছে ব্যবসায়ীরা। এটি গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৌসুমি ফল, এই ফলের স্বাদ ভিন্ন রকম। তাই এই সুস্বাদু তালশাঁস খেতে বাজারে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন।
গত বছরের চেয়ে এই বছর তালশাঁসের দাম অনেকটা বেশি, এই অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের।
কেউ বলে তালশাঁস, আবার কেউ বলে তালের চোখ,কেউ বলে তালকুরা বা বিচি।
বিভিন্ন নামে ডাকে এই মৌসুমি ফলকে। প্রচন্ড তাপদাহ বাড়ার সাথে সাথে এর চাহিদা বেড়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। প্রচন্ড তাপদাহে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তার মোড় কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অফিস, আদালতের সামনে ভ্যানে বা বস্তি দোকান দিয়ে বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস বা তালের চোখ।
বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্য মাসের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলে তালের শাঁস বা তালের চোখ বিক্রি। বিক্রেতারা বিভিন্ন জেলা ঘুরে ঘুরে এসব তালের শাঁস বা তালের চোখ কিনে নিয়ে এসে নিজ এলাকার হাট-বাজারে বিক্রি করেন। এ ফলটি খেতে যেমন সু-স্বাদু, তেমনি এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্ঠিগুণ।
এ বছর বাংলাদেশের মধ্যে আমাদের যশোরে সবচেয়ে বেশি তাপদাহ, আর যশোর জেলার সমস্ত হাট-বাজারে আমার মনে হয় বেশি পাওয়া যাচ্ছে, যদিও তালগাছ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে তার পরেও। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, তালশাঁস বা তাল চোখ ব্যবসায়ীরা তালের খামাল দিয়ে বসে আছেন, আর তাল কেটে শাঁস বা চোখ বের করতে ব্যস্ত তারা।
বছরের প্রথম মৌসুমী ফল, এ ফল খেতে তার চারপাশে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রতিজন ১৫ থেকে ২০টি করে অর্ডার দিচ্ছেন। এতে কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব তালশাঁস ব্যবসায়ীরা।
চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে এবার তালের ফলন কম। গেলো বছর ৩ থেকে ৪ টাকা দরে প্রতিটি তাল ক্রয় করতো তাল ব্যবসায়ীরা।
এইবার তা কিনতে হচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকা দরে। একটা তালের মধ্যে থাকে ২ থেকে ৩টি শাঁস বা চোখ। এখন প্রতিটি তাল বিক্রি করছেন ৬ থেকে ১০ টাকা পিছ। জৈষ্ঠ্য মাসের শুরুতে উঠতে শুরু করে তালের শাঁস। এদিকে যতদিন যাচ্ছে, ততই তালের গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। আর তাতে অনেকটায় দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে তালের শাঁস।
এক সময় গ্রামগঞ্জের মাঠে-ঘাটে আর রাস্তার পাশে দেখা যেতো তালের গাছ। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না প্রায় বিলুপ্তির পথে। আগের দিনে মানুষ তালের শাঁস কিনে খেতো কম, কেননা হাতের নাগালেই পাওয়া যেতো। এখন সেই তাল টাকার বিনিময়ে কিনে খেতে হচ্ছে। কথা হয় তালশাঁস কিনতে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে, তিনি বলেন, তালের শাঁস, স্বাদে ভরা। আমিসহ পরিবারের সবার পছন্দ, তাই তাল ক্রয় করতে আসছি এবং পরিবারের জন্য অর্ডার করেছি।
আরেকজন ক্রেতা যশোর মনিরামপুরের রাজগঞ্জ বাজারে কলেজ স্টুডেন্ট তারিকুল ইসলাম, তিনি বলেন অন্যান্য ফলের চেয়ে তালশাঁসের স্বাদ একেবার আলাদা। বাজারে যেকোনো ফল কিনবেন ফরমালিন ছাড়া কোনো ফল নেই, শুধু তালশাঁস এ ফরমালিন নেই, তাই অন্য ফলের মাঝে এই স্বাদ খুঁজে পাওয়া যায় না।
তাল শাঁস যেমন খাইতে ভালো তেমনি তালগাছের ও অনেক গুরুত্ব, তালগাছ বজ্রপাতের রক্ষায়ক, আমরা বেশি বেশি সারাদেশে তালগাছ লাগায় এবং সারাদেশ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করি।
এম,এম,এইচ/নিউজবিডিজার্নালিস্ট ২৪