শ্রীপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা সমস্যায়,দেখার কেউ নেই

লেখক:
প্রকাশ: 2 years ago

মোঃ এমদাদ শ্রীপুর মাগুরা শ্রীপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা সমস্যায়,দেখার কেউ নেই শ্রেণী কক্ষ সংকটে শ্রীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে জরাজীর্ণ একটি ভবন ও অভিভাবকদের বিশ্রামাগারে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরা। দাবি জানিয়েছেন দ্রুত উপযুক্ত পরিবেশে শ্রেণীকক্ষ বাড়ানোর। জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর মডেল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়টি ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অতি সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টি শ্রীপুরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় এখানে ভর্তির চাপ অনেক বেশি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে মোট ছাত্র সংখ্যা ৪৫৫। প্রতিটি শ্রেণিতে দুটি করে শাখা থাকায় মোট শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন ১১টি। কিন্তু বিদ্যালয়টিতে ব্যবহার যোগ্য কক্ষ রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে শিক্ষক কক্ষ ও ডিজিটাল স্মার্ট ক্লাসরুম বাদে শ্রেণিকক্ষ থাকে ৬টি। পুরাতন টিনশেড জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ ৩টি কক্ষ (১৯৬৮ সালের আগে প্রতিষ্ঠিত) ও অভিভাবক শেডের ১টি কক্ষ নিয়ে মোট ১০টি কক্ষে ১ শিফটে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যলয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌহার্দ্য খোন্দকার ও রেদওয়ানুর রহমান জানায় তাদের শ্রেণিকক্ষ জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড ভবনে হওয়ায় তারা সর্বদা ভীত সন্ত্রস্ত থাকে এবং তারা বলে বৃষ্টির সময় ভাঙা জানালা দিয়ে সাপ, ব্যাঙ সহ বিবিধ কীটপতঙ্গ ঘরে ঢুকে পড়ে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে। অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখার মান ভালো হওয়ার কারণে আমরা অনেক দূর দূরান্ত থেকে আমাদের ছেলেমেয়েদের এখানে ভর্তি করি। কিন্তু বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ না থাকায় শ্রেণি কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। শ্রেণি কক্ষের অভাবে আমাদের বসবার জায়গাটুকু (অভিভাবক শেড) শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক জনাব মোঃ হারুন মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, “গ্রাম এলাকার অনেক বিদ্যালয়ে ২তলা/৩তলা ভবন হলেও শ্রীপুর মডেল স্কুলে জরাজীর্ণ ভবনে আমাদের ক্লাস নিতে হচ্ছে।”বিদ্যালয়টিতে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা/ বৃত্তি পরীক্ষা, JSC পরীক্ষা, ও SSC পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয় বিধায় কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া সন্তানের অভিভাবক জানান, স্কুলটির পড়াশোনার মান দেখেই বাচ্চাদের ভর্তি করি। কিন্তু সরকারি একটি স্কুলে এমন জরাজীর্ণ ভবনে ক্লাস করানো খুবই হতাশাজনক। সব সময় সন্তানকে নিয়ে টেনশনে থাকতে হয়। এখানে অভিভাবকদের জন্য বসার জায়গাটুকু নেই। ছেলেকে স্কুলে রেখে বাসায় গেলেও অনেক টেনশনে থাকি। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক হাসেম আলী বলেন, ২০০৪ সালে সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী উপস্থিতিতে বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ স্কাউটস আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ মুত্তাকিম রহমান ৩য় স্থান অধিকার করে এবং বাংলাদেশ স্কাউটস কর্তৃক আয়োজিত প্রতীভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষায় উপস্থাপনে অত্র বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থী মোঃ বায়েজিদ ২য় স্থান অর্জন করে ।জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ তাফসিন খান ভারসাম্য দৌড়ে ১ম স্থান অধিকার করে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহনের জন্য অপেক্ষামান। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থীর পাশ, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রতিবছর ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও সাধারন বৃত্তি পেয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে PEDP-2} ভবনে কক্ষ আছে ৫টি। ২০১৯ সালে নির্মিত NBID GPS ভবনে কক্ষ আছে ৩টি। নতুন ভবনটিতে যদি উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করে আরো ৯টি কক্ষ নির্মান করা হয় তাহলে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর হতে পারে। প্রধান শিক্ষক মহোদয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর করার জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সবিতা রানী ভদ্র জানান, স্কুলটির শিক্ষার্থী অনেক বেশি হওয়ায় একটি টিনশেড ভবনে পাঠদান চালু রেখেছে। আমরা উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে আরো তিনটি শ্রেণীকক্ষ বিশিষ্ট ভবনের দাবি জানিয়েছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Emdad Emdad
error: Content is protected !!