মোঃ এমদাদ মাগুরা প্রতিনিধিঃ
সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের বিলনাথুর গ্রামের মধ্যপাড়ার ২২৪৭ নং দাগের ৯৯০ ফিট রাস্তাটি।এই রাস্তার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জুরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি মসজিদ,মাদরাসা,ঈদগাহ, গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম গোলাম মোক্তাদুর রহমান স্থানীয়দের চলাচলে এই কাঁচা সড়কটি তার তত্বাবধানে নির্মাণ হয়।কিন্তু এত বছর পরও সংস্কার করা হয়নি রাস্তাটি। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পর আর তাদের দেখা মেলে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায় শত ভাগ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী মালেক মন্ডল বলেন,সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম গোলাম মোক্তাদুর রহমান বিশ্বাস বহু বছর আগে এই কাঁচা রাস্তাটি তার তত্বাবধানে নির্মাণ হয়। সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও এই মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়।এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়।আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই।
স্থানীয় সমাজসেবক জসিম মন্ডল বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জুরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। মুসলিম কেউ মারা গেলে কাঁদার কারণে দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
ওই এলাকার বাসিন্দা মকসেদ আমীন বলেন,বিলনাথুর গ্রামের মধ্যপাড়ার দক্ষিণ মাঠ রাস্তা কাঁচা সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টির দিনে রাস্তাটি ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।ছেলেমেয়েরা বর্ষার সময় স্কুল কলেজে যেতে পারে না এমনকি জুরুরি মূহুর্তে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
ভুক্তভোগী বদিয়ার মন্ডল জানান,আমি একজন ভ্যানচালক।বর্ষার সময় এলে বাড়ি থেকে ভ্যান বের করতে পারি না।এমনকি নিজেই হেটে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারি না।আমাদের এই রাস্তাটি পাকা করা খুবই জুরুরি কিন্তু আমাদের কেউ খবর রাখে না।
স্কুল ছাত্রী তামান্না ইয়াসমিন রাফেজা বলেন,আমরা বর্ষার সময় এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে স্কুলে যেতে পারি না।কারণ এই সময় এলে হাটু পর্যন্ত কাদা পানি হয়।এমনকি প্রায়ই এই রাস্তায় বিভিন্ন দূর্ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে আমলসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেবানন্দ বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিয়া মাহমুদুল গণি শাহীন বলেন, আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন প্রকল্প দিয়ে রাস্তাটি পাকাকরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী শাফিন শোয়েব বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।