মৌলভীবাজারে নদ-নদী ও হাওরে পানি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে, বন্যার ঝুঁকিতে জেলার বাসিন্দারা

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 3 months ago

তুহিনুর রহমান তালুকদার, স্টাফ রির্পোটার :
মৌলভীবাজারে নদ-নদীর ও হাওরে বাড়ছে পানি। তলিয়ে যাচ্ছে ক্ষেতকৃষি ও রাস্তাঘাট। বন্যার ঝুঁকিতে চরম শঙ্কায় জেলার নদী ও হাওর পাড়ের বাসিন্দারা। গেল দুইদিনের অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজার জেলার নদী ও হাওরে আবারো বাড়ছে পানি। জেলার মনু, কুশিয়ারা, ফানাই, ধলাই ও জুড়ী নদী ছাড়াও হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইলহাওর পানিতে টুইটম্বর।  মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় সাগরের লঘু চাপের প্রভাব ও ভারতের অতি বৃষ্টির ঢলে পানি বাড়ছে। জেলায় এবছর ১ম ও ২য় ধাপে বন্যা ও দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহানো ক্ষতিগ্রস্তরা হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৩য় দফা বন্যার আশঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গেল দুইদিন থেকে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলা সবক’টি নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে ও কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থান করছে। জেলার রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চলের বাসা-বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বাড়ছে মনু, জুড়ী, ফানাই, ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর। হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওরেও পানিতে টুইটম্বর। এ ছাড়া স্থানীয় ছোট বড় গাং ও খালের পানি উপচে ক্ষেতকৃষি ও বাড়িঘরে উঠছে। মুষলধারে বৃষ্টি হওয়াতে বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন জেলার নদী ও হাওর তীরের বাসিন্দারা। উপজেলা শহরগুলোতেও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।
গেল দু’দিনের পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডিং অনুযায়ী জেলার সবক’টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার শহর সংলগ্ন চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুলাউড়ার মনুব্রিজ পয়েন্টে মনু নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদী বিপদসীমার ১৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুরের কুশিয়ারা পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, গতকাল ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, আবহাওয়ার এই অবস্থা আরও ২-৩ দিন এরকম থাকতেও পারে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে বৃষ্টি হওয়াতে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে জেলার কোথায়ও এখনো নদীভাঙন না থাকলেও ধলাই নদীর ৪টি স্থানে বাঁধ চরম ঝুঁকিতে আছে। তারা সতর্ক নজরদারি রাখছেন। সব প্রস্তুতিও রয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, গেল দু’দিনের চলমান বৃষ্টিতে রোপা আমন ধান ১৩৪৪ হেক্টর আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য ফসলের ক্ষয়ক্ষতিও নিরূপণ চলছে বলে তিনি জানান।
error: Content is protected !!