দুর্যোগে হাটি রক্ষা ও পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রম এর উপকরণ বিতরণ

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 1 year ago

মিতালী রানী দাস,সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান:

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৩ নং রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া গ্রামের কান্দারহাটিতে ২৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে দুর্যোগে হাটি রক্ষা ও পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এফআইভিডিবি-আরইসিসি প্রকল্পের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে ২৫ জন সদস্যকে জনপ্রতি ২৮ টি করে চারা বিতরণ করা হয়। উপকরণগুলোর মধ্যে রয়েছে হাটি রক্ষার জন্য হিজল, করচ ও বরুন গাছের চারা, মুর্তার চারা, নেপিয়ার ঘাসের কাটিং। পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রমের জন্য বিভিন্ন উৎপাদন প্রযুক্তি যেমন ঘুড়ি পদ্ধতিতে সবজি চাষ, বস্তায় সবজি চাষ, ভাসমান সবজি বেড ইত্যাদিতে লাগানোর জন্য বরবটি, শসা, মুলা, গাজর, পুইশাক, লাউ, ফরাস, সরিষা বীজ বিতরণ করা হয়।

দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া গ্রামের এই কান্দার হাটিটি একেবারে কালিয়াগোটা হাওড়ের ধারে অবস্থিত। বড় আকারের এই হাওড়টি নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত। হাওড়ের ধারে বসবাসকারী গচিয়া গ্রামের কান্দার হাটির ২৫টি পরিবার প্রতি বছর আফালের (বাতাসের দ্বারা সৃষ্ট ঢেউ) মুখোমুখি হয়। এসব পরিবারের ভিটে মাটি দিয়ে তৈরি। সুতরাং, আফাল শুরু হলে তাদের ভিটার মাটিতে তা জোরে আঘাত করে ও ভিটার ক্ষতি করে। এছাড়াও, তীব্র বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ের উচ্চ তীব্রতায় ঢেউয়ের কারণে মাটি ধুয়ে যায় এবং ঘরবাড়ি এবং অন্যান্য কাঠামোর ক্ষতি হয়। এতে বাসযোগ্য জমির আকার সঙ্কুচিত হয়ে যায়।

এফআইভিডিবি-আরইসিসি প্রকল্প কর্তৃক হাটিবাসীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে হাটি সুরক্ষা ও পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব উপকরণ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এফআইভিডিবি-আরইসিসি প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠির কৃষি, খাদ্য সুরক্ষা এবং জীবিকার উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলিতে সহনশীলতা বৃদ্ধি করা। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রকল্পটি বেশ কিছু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যার মধ্যে রয়েছে ক্লাইমেট ফিল্ড স্কুল পরিচালনা করা, জলবায়ু নির্ভরশীল কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী স্থাপন করা, গ্রামভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করা এবং এ্যাকশন প্ল্যানের উপর ভিত্তি করে উদ্ভাবনী কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা। জলবায়ুনির্ভরশীল কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী স্থাপন এবং ওয়ান স্টপ “কৃষি পরিষেবা কেন্দ্র” স্থাপন করে কৃষকদের দুর্যোগ ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্য জানানোর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল হক জুয়েল জরুরি কাজে বাইরে থাকায় ভিডিও কলে অংশগ্রহণকারীদের সাথে কথা বলেন ও সঠিকভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার আহবান জানান। উপকরণ গ্রহণ করার পর অংশগ্রহণকারীগণ উপকরণসমূহ সঠিক ব্যবহারের প্রতিশ্রতি দেন এবং আগামীতে আরো কোন উদ্যোগ থাকলে তা গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাদের হাটি রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রমে সবজি চাষে সহযোগিতা করার জন্য এফআইভিডিবি- আরইসিসি প্রকল্পকে ধন্যবাদ জানান।

error: Content is protected !!