ডায়রিয়ার লক্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকার

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 2 years ago

হেল্থ ডেস্কঃ

গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে ডায়রিয়া ও আমাশয় জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। দূষিত পানি পান ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ এর অন্যতম প্রধান কারণ।
বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া যেমন সালমোনেলা (Salmonella), শিগেলা (Shigella flexneri), ব্যাসিলাস (Bacillus cereus) , ইশ্চেরিচিয়া কোলাই (Escherichia coli), ভিব্রিও (Vibrio ) ইত্যাদি ডায়ারিয়া ঘটাতে পারে। এছাড়া ভাইরাস ঘটিত ডায়ারিয়া রোটাভাইরাস, হেপাটাইটিস-এ ভাইরাস ডায়ারিয়া ঘটাতে পারে।

ডায়রিয়ার লক্ষণ
১.ঘনঘন পাতলা পায়খানা।
২. বমি বমি ভাব হওয়া।
৩.পেটে ব্যথা, পেটে চাপ অনুভূত হওয়া, ও পেট ফোলা।
৪.পানিশূন্যতা হয়।
৫. প্রচণ্ড ক্লান্তি হওয়া।
৬.শুকনো শ্লেষ্মা, হৃদ্‌স্পন্দন বৃদ্ধি। ৭.মাথাব্যথা, তৃষ্ণা বৃদ্ধি, প্রস্রাব হ্রাস ও শুষ্ক মুখ ইত্যাদি।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ:
১.বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া।

২.টয়লেট থেকে এসে সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড দু হাত ভালো করে ধৌত করা।
৩. কাচা টয়লেটের পরিবর্তে স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করুন।

৪.খাবার তৈরির আগে হাত ধোয়া ও পরিবেশন করার আগেও ভালোভাবে হাত ধোয়া।
৫.শাকসবজি পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধৌত করে রান্না করা।
৬.অতিরিক্ত গরমে বিদ্যুৎ ঘনঘন চলে যায় ফলে ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যায় কিংবা যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়।এমন খাবার থেকেও ডায়রিয়া হতে পারে।তাই আপাতত ফ্রিজের খাবার পরিহার করা।

৭.প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র যেমন- থালা-বাটি,চামচ,গ্লাস, পাতিল ইত্যাদি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
৮.পরিস্কার পানি পান করতে হবে।
৯.ছোট বাচ্চাদের (৫-৬মাস)শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ান।
১০.পঁচা, নোংরা ও বাসি খাবার পরিহার করুন।
১১.পরিস্কার পানি না পেলে প্রয়োজনে ১৫-২০ মিনিট ফুটিয়ে নিন অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন।
১২.পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে কিছুদিন আইসোলেশনে রাখুন।

প্রতিকার:
ডায়রিয়া শুরু হওয়ার পরে পরেই খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করতে হবে। দেরি না করে পরিষ্কার পানিযোগে স্যালাইন তৈরিতে করে খাওয়াতে হবে।স্যালাইন যত দেরিতে খাওয়ানো হবে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকবে।
পায়খানা ও বমির পরিমাণ লক্ষ করে সেই তুলনায় স্যালাইন খাওয়াতে হবে।স্যালাইন খাওয়ানো কিছুতেই বন্দ করা যাবে না,এমনকি বমি হলেও নিয়মিত খাওয়াতে হবে।প্রয়োজনে শিরার মাধ্যমেও স্যালাইন দেওয়া ভালো উপকার।
পাতলা পায়খানা চলা অবধি স্যালাইন খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।

স্যালাইন তৈরি :

১.প্যাকেট স্যালাইন-
খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেট বাজারে পাওয়া যায়। প্যাকেটের গায়ে নির্দেশনা দেওয়া থাকে।সেই নির্দেশনা অনুসারে পরিষ্কার পানি দিয়ে স্যালাইন তৈরি করতে হবে।

২.লবণ ও গুড়ের স্যালাইন:
পরিষ্কার পাত্রে আধা লিটার পরিষ্কার পানি এক চিমটি লবন,এক মুঠো গুড় বা চিনি দিয়ে ভালোভাবে মিশাইলেই তৈরি হয়ে যাবে স্যালাইন যা ৬ ঘন্টা পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে।

মাসুম বিল্লাহ
লেখক,সাংবাদিক ও বাংলাদেশ ট্রাডিশন মেডিসিন প্রভাইডার (শিক্ষানবিশ)।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

error: Content is protected !!