মুন্না ইসলাম আগুন দুর্গাপুর প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলা গোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে গিয়ে স্কুলের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীর সাথে কথা বললে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
তারা জানান, প্রধান শিক্ষক মোঃ জিল্লুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আবুল হাসান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময়, ভিন্ন-ভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদান করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।
শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী কেউ বাদ পড়েনি এই অর্থ লোভী জিল্লুর রহমান ও আবুল হাসানের থাবা থেকে। স্কুলের শিক্ষক,কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা জানান এই হেড স্যার (জিল্লর রহমান) আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে ছিল দহরম-মহরম সম্পর্ক। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার জন্য নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করতেন এবং নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকতেন না।
সভাপতি আবুল হাসান প্রধান শিক্ষকের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে এই নিয়োগ বাণিজ্য করেন।
নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন-১. মোঃ ফরহাদ হোসেন (২৫.১০.২০১১ইং, টাকার পরিমাণ ৩,৬০,০০০/=) ২. মোছাঃ রিনা বেগম ( ০১.০৯.২০২১ ইং, টাকার পরিমাণ ৯,০০,০০০/=) ৩.জলি খাতুন (০১.০৯.২০২১ ইং, টাকার পরিমাণ ৯,০০,০০০/=) ৪. নাসের উদ্দিন ( ০৩.১২.২০২৩ ইং, টাকার পরিমাণ ৬,৭০,০০০/=)
উল্লেখ্য, ৫ই আগষ্ট সরকার পতনের পূর্বে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করে সে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৫৩ জন গ্রামবাসীর গণ স্বাক্ষরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে গ্রামবাসির পক্ষে গত ০১.০৯.২০২৪ ইং তারিখে সাবেক মেম্বার আকবর ফৌজদার এবং আফজাল হোসেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
তারই জের ধরিয়া পরবর্তীতে গত ২৭.০৯.২০২৪ ইং তারিখ দুপুর ১২.১০ মিনিটে এক বৈঠকে প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান ২৮,৩০,০০০/= টাকার স্বীকারোক্তি মূলক লিখিত দেন এবং উক্ত টাকার বিপরীতে একটি চেক প্রদান করেন আকবর মেম্বারের কাছে ।
চেকের সত্যতা জানার জন্য আকবর মেম্বারের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন চেক প্রধান শিক্ষকের কাছেই আছে। নিয়োগ বাণিজ্য বিষয়ে সভাপতির বক্তব্যে নেওয়ার জন্য বার বার চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন, সব কিছু প্রধান শিক্ষক জানেন । প্রধান শিক্ষকের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, চেক আকবর মেম্বারের কাছে, এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
উল্লেখ্য, আগামী ২৯.১১.২০২৪ ইং তারিখে প্রধান শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন। এলাকা বাসী, শিক্ষক, কর্মচারী এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্নঃ নিয়োগ বাণিজ্য করা এই অর্থ কি তাহলে কালো পর্দার পিছনে দুর্নীতিবাজ রা ভাগ বাটোয়ারা করে নিলো ?? তাহলে কি স্কুলের উন্নয়ন হবে না?? কে বা কারা দিবেন এই প্রশ্নের জবাব। জন মনে ভয় প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে এই অর্থ আর আদায় করা সম্ভব হবে না।