হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার ৩ নং কোলা ইউনিয়নের কোলা বাজারের মাছের দোকানের পাশে হিমায়িত গোস্তো বা মাংস পলিথিনে করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় গোসতো বিক্রেতা আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে। কোলা বাজারে প্রতি সপ্তাহে ২ দিন তথা শনি ও মঙ্গলবার হাটের দিন।হাটের এই দুই দিন আব্বাস আলী গরু জবাই করে তার মাংস বিক্রি করলেও অন্য দিনগুলোতেও তিনি ১ কেজি, ২ কেজি ও ৫ কেজি ওজনের পলিথিনে রাখা হিমায়িত গোস্তো বিক্রি করে থাকেন। এই গোস্তো তিনি কোথায় পান? কি ধরনের পশুর গোস্তো ? তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা? খাবার উপযোগী কি? এসব নানা প্রশ্ন ক্রেতা সাধারণের মনে ঘুরপাক খাই সব সময়। প্রতি কেজি হিমায়িত গোস্তো তিনি বাজারদর থেকেও ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম মূল্যে বিক্রি করেন। সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা তার নিকট হিমায়িত গোস্তো পাওয়া যায়। স্থানীয় অনেকের অভিযোগ আব্বাস আলী স্বাস্থ্যসম্মত নয় আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগা গরু রাতের আঁধারের জবাই করে সেই গোস্তো হিমায়িত করে বিক্রি করেন।সপ্তাহ জুড়েই তিনি হিমায়িত গোস্ত বিক্রি করে থাকেন।অনেক ক্রেতা হিমায়িত গোস্তো কিনে বাড়িতে যেয়ে দেখেন তা দিয়ে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে গোশত বিক্রির সার্বিক বিষয়গুলো দেখভাল করার দায়িত্ব থাকলেও তা সঠিকভাবে করা হয় না বলেও তারা অভিযোগ করেন। অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশ ও হিমায়িত মাংস বা গোস্তো বিক্রির জন্য যেসব নিয়ম নীতি মানা প্রয়োজন আব্বাস আলী তার কিছুই মানেন না। যে কারণে ভোক্তা সাধারণের মনে এখন তার বিক্রিত গোস্তের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরজমিনে আব্বাস আলীর গোস্তের দোকানে যেয়ে দেখা যায়, ফ্রিজের মধ্যে পলিথিনে করে অনেক গোশত হিমায়িত করে রাখা আছে। ওই সময় গোশত কিনতে আসা খালকুলা গ্রামের আহাদ আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ করে বাড়িতে আত্মীয় এসেছে, তাই গোশত কেনার প্রয়োজন। এ কারণে এখান থেকে ২ কেজি কিনলাম। সব সময় তো আর কালিগঞ্জ থেকে যেয়ে গোশত কিনে আনা সম্ভব হয় না। হাতের কাছে যেমন পাচ্ছি তেমন কিনছি। তবে কিসের গোশত কিনছি তা তো আর নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি না। টাটকা গোশত কিনতে পারলে ভালো হয়, এ বাজারে তা আর হচ্ছে না।স্থানীয় পশু চিকিৎসক হাবিব জানান, পূর্বের চেয়ারম্যানের আমলে নিয়ম মেনেই গরু জবাই করা হতো এবং টাটকা গোস্তো বিক্রি হতো। এখন কেউ জানে না, দেখে না কি গরু জবাই হচ্ছে। সব কথা তো আর খুলে বলা সম্ভব না। তবে দায়িত্বশীলদের অবশ্যই এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া উচিত। খোলা বাজারের গোস্তো বিক্রেতা আব্বাস আলী জানান, এক গরু জবাই করে চার-পাঁচজন ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। অবিক্রিত গোশত থাকে না বললেই চলে, যতটুকু থাকে তা ফ্রিজে রেখে বিক্রি করি।অনেক সময় জবাই করার আগের দিন গরু দোকানের সামনে বেঁধে রাখা হয়। আগে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলেও এখন তা করা হয় না । রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার নামে আপনার কাছে নানা অভিযোগ দিতে পারে, যা সত্য নয়।খোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন,পূর্বে কিছু সমস্যা থাকলেও বর্তমানে আমি নিজে স্থানীয় মৌলভী ঠিক করে দিয়েছি গরু জবাইয়ের জন্য। তবে পলিথিনে যে গোস্তো তারা বিক্রি করে তা কি ধরনের পশুর এবং খাবার উপযোগী কিনা তা খতিয়ে দেখব। কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুল্লাহ হাবিব জানান, মাংস বা গোস্তো বিক্রির সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। খোজ খবর নিয়ে আব্বাস আলীর ক্ষেত্রে যদি নিয়মের কোনো ব্যত্তয় লক্ষ করা যায়, তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।