আলিফ আরিফা গাজীপুর প্রতিনিধি :
আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে অবশেষে আটক হলো ৬ মামলার আসামী চিহ্নিত চাঁদাবাজ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল কাদেরের ছেলে সাইদুর রহমান অর্ণব (২৬)সহ ওই ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ৯ মামলার আসামী মৃত ফজলুল হকের ছেলে আরেক চাঁদাবাজ সেলিম (৩৫)।
জানা যায়- সেনা কল্যাণ সংস্থার সহযোগি প্রতিষ্ঠান মাস্টার বিল্ডার লিঃ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৫ নং সেক্টর এর রোড০ ১১২ এবং ২০২ এর প্লট নং- ১৫-২০২-০০১ সংযোগস্থলে অভ্যন্তরীন রাস্তা ও সারফেস ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করলে ১৮ জানুয়ারি ২৪ ইং বিকেল অনুমান ৩ টার দিকে আটককৃত অর্ণব, সেলিম মেম্বার ও হাফিজুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে যায় এবং দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বলেন অন্যথায় কোন কাজ করা যাবে না।
পরবর্তীতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২৪ তারিখ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আবারো তারা প্রকল্পের সাইটে উপস্থিত হয়ে কর্মরত লোকজনকে এই মর্মে হুমকী দেয় যে, আমাদেরকে চাঁদা না দিয়ে কেউ কাজ করতে পারবে না। তারা আরো হুমকী দেয় যে, ২ কোটি টাকা চাঁদা দেয়ার পর আমাদের পছন্দমতো সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে নির্মাণ সামগ্রী মালামাল ক্রয় করতে হবে। অন্যথায় কোন গাড়ি মালামাল নিয়ে সাইটে প্রবেশ করতে পারবে না।
পরবর্তী ২৭ ফেব্রুয়ারি ২৪ ইং তারিখ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রকল্পের সাইটে মালামাল আনলোড করার সময় অর্ণব ও সেলিম মেম্বার লোকজন নিয়ে পুনরায় সাইট এলাকায় যায় এবং বে-আইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ অনধিকার প্রবেশ করে ট্রাক ড্রাইভার শামীমসহ উপস্থিত সকলকে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে। শুধু তাই নয় ওই দিন তারা ইট নিক্ষেপ করলে একটি ট্রাকের লোকিং গ্লাস ও সামনের গ্লাস ভেঙ্গে যায়। ওই দিন দবির উদ্দিন নামের আরেক চাঁদাবাজ প্রকল্পের সার্ভেয়ার বিপ্লবকে মুঠো ফোনে গালাগাল ও নানা ধরণের হুমকী প্রদান করে। এখানেই শেষ নয়- চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী সেলিম মেম্বার ও অর্ণব ওই দিন দিবাগত রাতে আরো ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে প্রকল্পের সাইটে প্রবেশ করে চাঁদার টাকা না পেয়ে ভাংচুর করে সাইটে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে এবং সাইটে কর্মরতদের একটি কক্ষে আটকে রেখে সাইটে থাকা আনুমানিক ১৮ হাজার পিস ইটা, ১.৫ আরএম দুই কয়েল তার, ৪.০ আরএম ৩৪গজ তার, ১০টি এলইডি বাল্ব, ৩টি সিলিংফ্যানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ট্রাকে ভর্তি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩ লাখ টাকা। মালামাল নেয়া কালেও তারা বলে যায়, দুই কোটি টাকা চাঁদা না দেয়া পর্যন্ত এখানে কোন কাজ করা যাবেনা।
পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (লজিস্টিক) অফিসার মোঃ জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৩/৪৭, তাং- ১৩/০৩/২৪ ইং।
মামলা দায়েরের পর ওই চাঁদাবাজরা হাইকোর্ট থেকে সাময়িক জামিন এনে মঙ্গলবার গাজীপুরের নিম্ন আদালতে হাজির হন। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
জানা যায়- এ পর্যন্ত সেলিম মেম্বারের বিরুদ্ধে ৯টি এবং চেয়ারম্যানপুত্র অর্ণবের বিরুদ্ধে ৬টি বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে।