সাইবুর রহমান সুমন,শার্শা:
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শার্শা-বেনাপোল সীমান্তের চোরাই পথে অবৈধভাবে ভারতে কোরবানির পশুর চামড়া পাচার ঠেকাতে শার্শা ও বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ৪৯ (বিজিবি)।
শুক্রবার (৬ জুন) যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী সকালে বেনাপোল কোম্পানি সদর দপ্তরে ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিজিবির পাশাপাশি শার্শা ও বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশও চামড়া পাচার রোধে কাজ করবে বলে জানা গেছে।
আগামীকাল ৭ই জুন (শনিবার) কোরবানি ঈদের দিন থেকে যতদিন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকাদিয়ে পাচারের সম্ভবনা থাকবে ততদিন পর্যন্ত বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে বলে বিজিবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাজার থেকে জানা যায়, গত বছরের মতো এবারও পশুর চামড়ার দাম কম। গতবার কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। সরকারি দামেও তেমন কোন সাড়া মেলেনি। অপর দিকে ভারতে চামড়ার দাম বেশি হওয়া পাচারের সম্ভাবনা থেকে যায়। এতে বিজিবি প্রতিবছরই পাচারের ঝুঁকি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেয় সীমান্ত এলাকায়।
স্থানীয় চামড়া বিক্রেতা কসাই মানিক জানান, পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়ার বর্তমান ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়ার দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ছাগলের চামড়া বড়টার দাম প্রতি পিস ৪০ টাকা ছোট ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে,শার্শার বেনাপোল সীমান্ত ঘেষা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ রুপি এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া প্রতি পিস ৭০০ থেকে এক হাজার রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
বেনাপোল দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম আবু হানিফ জানান, পৌর এলাকার মানুষ তাদের কোরবানির পশুর চামড়া এতিমখানায় দান করে থাকেন। কিন্তু এবছর চামড়ার দাম খুবই কম যা দ্বারা পরিশ্রমের টাকাও উঠবে না। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে চামড়া সংরক্ষণ করার জন্য লবন প্রদান করেছেন।
৪৯ বিজিবি কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, চামড়া আমাদের দেশের মূল্যবান সম্পদ। এই সম্পদ যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতে পাচার না হয় সেজন্য বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ঈদের দিন সকাল থেকেই বাড়তি নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতাম‚লক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে ৭২ কিলোমিটার এলাকায় যেসব বিজিবির পোস্ট ও ক্যাম্প রয়েছে, সেগুলোতে এ বিষয়ে বাড়তি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও যেকোনো ধরনের অপরাধ রুখতে বিজিবি সবসময় সীমান্তে সোচ্চার রয়েছে। যশোরের শার্শা ও বেনাপোলের যেসব সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের ঝুঁকি থাকে সেগুলো বেনাপোল, গাতীপাড়া,বড়আঁচড়া,সাদিপুর, রঘুনাথপুর, ঘিবা, ধান্যখোলা, কাশিপুর, শিকারপুর, শালকোনা, আন্দুলিয়া, দৌলতপুর, পুটখালী, গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, পাঁচভ‚লট ও রুদ্রপুর,হিজলী, মাসিলা, শাহজাতপুর, বর্ণি সীমান্ত।
বেনাপোল পোর্টথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রাসেল মিয়া জানান, বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কারা কোরবানি পশুর চামড়া পাচার করতে পারে সন্দেহ ভাজনদের তালিকা করে তাদের উপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া যে কোন প্রকার অপরাধ রুখতে পুলিশের স্পেশাল টিম ও মোবাইল টিম কাজ করছে।