
হুমায়ুন কবির , কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) :
এক কিশোরিকে উদ্ধারে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এসে মারপিটে যশোরের ৩ পুলিশ সদস্য আহতের ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাতে যশোর চাচড়া পুলিশ ফাড়ির এটিএসআই শওকত হোসেন বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৬০/৭০ জনের নামে কালীগঞ্জ থানাতে ওই অভিযোগটি দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই বাকুলিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক করেছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকালে কালীগঞ্জে বাকুলিয়া গ্রামে এক কিশোরীকে উদ্ধারে এসে স্থানীয়দের মারপিটে আহত হন যশোর কোতয়ালী থানার এএসআই তাপস কুমার পাল, কনেস্টবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভার বাকুলিয়া গ্রামের ইমাদুলের ভাইরার ছেলে সুজন হোসেন সম্প্রতি যশোর থেকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরী মেয়েকে নিয়ে এসে বিয়ে করে ওই বাড়িতে অবস্থান করছিল।
এ ঘটনায় মেয়ের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার ভীকটিম কিশোরীকে উদ্ধারে এসে মারপিটের স্বিকার হন ওই ৩ পুলিশ সদস্য। ঘটনার পর কালীগঞ্জ থানাতে পুলিশের দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, যশোর শেখহাটি বাবলা তলার হাফিজ আহম্মেদের এক অভিযোগের ভিত্তিতে তার অপ্রাপ্ত কিশোরী মেয়েকে উদ্ধারে যশোর থানার পুলিশ সোমবার কালীগঞ্জে আসেন।
বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগীতায় মেয়েটিকে উদ্ধারে তারা বাকুলিয়া গ্রামের ইমাদুলের বাড়িতে যায়। এ সময় ভিকটিম মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় ওই বাড়ীর লোকজনসহ স্থানীয়রা বাধা প্রদান ও গালিগালাজ শুরু করে।
এক পর্যায়ে পুলিশের কাছ থেকে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নিতে লাঠি ও বাটাম দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক মারপিট করে জখম করে।
এ খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌছে আহত পুলিশ সদস্য ও ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানাতে নিয়ে আসেন। এবং আহত পুলিশ সদস্যদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান। পুলিশ সদস্যরা কালীগঞ্জ পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আছাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী মোছাম্মদ মাছুরা খাতুকে প্রথমে নাক বরাবর ঘুষি মারেন বলেও মৌখিক অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। আর একারণেই মূলত গোলযোগের সৃষ্টি হয় বলে তারা দাবি করেন ।
এ ঘটনায় যশোর পুলিশের পক্ষ থেকে কালীগঞ্জ থানাতে অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বাকুলিয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের পুত্র রাজু আহম্মেদ (২৬), আয়নাল বিশ্বাসের পুত্র মামুন (৩২) ও রহিম বিশ্বাসের পুত্র আতিকুল ইসলাম মিন্টু সহ ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। মারপিটের স্বীকার আহত কনেস্টবল রাবেয়া খাতুন জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার প্রথমে সময় ৬/৭ জন পুরুষ এসে মেয়েটিকে ছেড়ে দিতে বলে। কিন্তু না ছাড়াই আমাকে এবং আমার সাথে থাকা নারী কনেস্টবলকে মারপিট শুরু করে। তারা আমাদের ৩ জন পুলিশ সদস্যকেই বেশ মারপিট করেছে। যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ওই সময় একজন নারী পুলিশ সদস্য আমার স্ত্রীকে ঘুষি মেরে মারাত্মকভাবে যখন করে।এরপর এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখলে আমি তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে স্ত্রীকে নিয়ে আমি হাসপাতালে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, যশোর কোতয়ালী থানার পুলিশ কালীগঞ্জে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরিকে উদ্ধারে এসে হামলার শিকার হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই রাতে একটি অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করেছে। বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও যোগ করেন তিনি।