ঝিনাইদহের অন্যতম জনবহুল উপজেলা কালীগঞ্জ, যেখানে প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস। ব্যবসা, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য শহরকেন্দ্রিক জীবনযাত্রা গড়ে উঠলেও তীব্র যানজট মানুষের স্বাভাবিক চলাচলকে কঠিন করে তুলেছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যত্রতত্র যানবাহন পার্কিংয়ের কারণে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, যানজট নিরসনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পৌর প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা কালীবাড়ি মোড়ে দেখা যায়, যেখানে তিনটি রাস্তা মিলিত হলেও নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। অবাক করার বিষয় হলো, এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের মাঝখানেই রিকশা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক পার্কিং করে রাখা হয় প্রতিনিয়ত। কোনো ধরনের নজরদারি না থাকায় এখানেই গড়ে উঠেছে এক ধরনের অস্থায়ী যানবাহন স্ট্যান্ড। ফলে পথচারী ও ব্যবসায়ীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
শুধু কালীবাড়ি মোড়ই নয়, জনতা মোড় এবং মুরগীহাটা মোড়েও একই চিত্র দেখা যায়। মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রধান সড়কটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেলের দখলে চলে গেছে। রাস্তায় একাধিক স্তরে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানও যানজটের অন্যতম কারণ। ফলে শহরবাসীর নিত্যদিনের চলাচল দুঃসহ হয়ে উঠেছে।
যানজটের কারণে ব্যবসায়ীরাও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কালীবাড়ি মোড়ের সবজি ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, ক্রেতারা আসতে না পারায় তার ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। একই অভিযোগ জানিয়ে কালীগঞ্জ পৌর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, যানজট নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার কথা বলেছেন, কিন্তু কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। তিনি শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক দেদারুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং যানজট নিরসনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে শহরবাসীর প্রশ্ন, এই আশ্বাস বাস্তবে রূপ নেবে কবে?