
হুমায়ুন কবির(কালীগঞ্জ)ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রাজস্ব শাখায় দীর্ঘদিন ধরে প্রেষণে থাকা প্রধান সহকারী মানষ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।ভুক্তভোগী উপজেলার শাহপুর গ্রামের মৃত শরিতুল্লাহ গাজীর ছেলে আব্দুল কাদের ২০ আগস্ট এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
উক্ত অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত ৪২ নং শাহপুর মৌজার ৩.৭৩ একর জমিতে থাকা পুরাতন পুকুর খনন ও সংস্কারসহ পাড় বাধানর অনুমতির জন্য ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর ৪ জুন ২০২৫ তারিখ একটি আবেদন করেন আব্দুল কাদের । এরপর রাজস্ব শাখার বড়বাবু মানষ কুমার সরকার দ্রুত অনুমতি করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেন।
প্রথমে তিনি তার নিকট থেকে ট্রেজারি করা বাবদ ১১ হাজার টাকা নেন। এর কিছুদিন পর অনুমতি পত্রটি দ্রুত পেতে হলে টাকা লাগবে বলে জানান। তখন তিনি প্রথমে তাকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে আরো ৫ হাজার টাকাসহ তিনবারে বিনা রসিদে তার কাছ থেকে মোট ৩৬ হাজার টাকা নেন মানস বাবু। কিছুদিন পর আব্দুল কাদের জানতে পারেন জেলা কার্যালয় থেকে উপজেলা ভূমি অফিস হয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার নিকট তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চিঠি এসেছে।
এ সময় তৎকালীন ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের নায়েব ইকবাল হোসেন তার কাছে উপজেলা ভূমি অফিসের খরচ বাবদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন তিনি তাকে প্রথমে ৩ হাজার পরবর্তীতে ২ হাজার সর্বমোট ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন ।সম্প্রতি তিনি ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। ভূমি অফিসের এই দুই কর্মকর্তা ঘুষ নিয়েও কাজটি করে না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে চলেছেন। আব্দুল কাদের দ্রুত পুকুর সংস্কারের অনুমতি পাওয়াসহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট ঘুষের টাকা ফেরত এবং ওই দুই কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সাবেক ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের নিকট প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলে অফিস খরচের নামে ঘুষ নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রাজস্ব শাখার প্রধান সহকারী মানষ কুমার সরকার বলেন, ইউনিয়ন থেকে এখনও প্রতিবেদন আসেনি। আর আবেদনকারীর নিকট থেকে তিন বারে বিনা রশিদে ৩৬ হাজার টাকা নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তা মৌখিকভাবে স্বীকার করেন এই প্রতিবেদকের নিকট। একই সাথে আবেদনকারী আব্দুল কাদেরকে দেখা করার জন্যও বলেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শাহিন আলমের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, পুকুর সংস্কারের জন্য ট্রেজারীর নামে বা অফিস খরচ বাবদ টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেয়। কেউ নিয়মবর্হিভূতভাবে যদি কোনো টাকা নিয়ে থাকে তাহলে সে দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।এ সময় ভুক্তভোগীকে তার সাথে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন।