
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড কাঁচপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ‘রিভিউ’ নামক একটি কথিত আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তথ্য সংগ্রহে গিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক মিথ্যা অভিযোগের শিকার হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরেই “আবাসিক হোটেল” নামে চালু থাকলেও এর ভেতরে গোপনে দেহব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। হোটেলের বাইরে নেই কোনো বৈধ সাইনবোর্ড, অথচ শহরের বিভিন্ন স্থানে ভিজিটিং কার্ড ও মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে “আবাসিক হোটেল” পরিচয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, হোটেলটির মালিক আশুলিয়ায় মাছের আড়তের ব্যবসা করেন। হোটেলটি মো. জাহিদ মিয়া ও মো. শরিফুল ইসলাম পরিচালনা করছেন, এবং এর সঙ্গে আরও কয়েকজন অংশীদার যুক্ত আছেন। অতীতে একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখানে অভিযান চালিয়ে নারীসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করলেও বন্ধ হয়নি এই অনৈতিক কার্যকলাপ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হোটেলের আশপাশে কিছু দালাল পথচারীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে থাকে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি—এই হোটেলের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করা হোক এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
সাংবাদিকদের বরাতে জানা যায়, গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ‘সিআইএন টিভি ২৪’ এবং নিউজ বিডি জার্নালিস্ট ২৪-এর জেলা প্রতিনিধি এবং ‘দৈনিক মুক্ত খবর’-এর স্টাফ রিপোর্টার স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছায়া তদন্তে যান। তারা দূর থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলে আসেন।
পরবর্তীতে হোটেল ম্যানেজার মো. তৌয়বুর রহমান একটি অসাধু চক্রের সহায়তায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় উল্টো ডাকাতির অভিযোগ দাখিল করেন, যা সাংবাদিকদের মতে সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।
এ বিষয়ে সাংবাদিক ইকবাল হোসেন জানান, তিনি বর্তমানে ‘পল্লী টিভি’র হয়ে কাজ করছেন এবং গত ছয় মাস ধরে পুলিশের কোনো সোর্স হিসেবে কাজ করছেন না। তার ভাষ্যমতে, তারা কেবল তথ্য যাচাইয়ের জন্য হোটেল এলাকায় উপস্থিত হয়েছিলেন এবং কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ বা সরাসরি সাক্ষাৎ করেননি।
সাংবাদিকরা জানান, থানায় মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিবকেও ঘটনাটি অবহিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতের একটি পরিপত্রে বলা হয়েছে, সাংবাদিকরা তথ্যের ভিত্তিতে যেকোনো জায়গায় রিপোর্ট করতে পারবেন—এতে কারও আপত্তি করার সুযোগ নেই।
এদিকে, এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের ভাষ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে হোটেলটি একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে পরিচিত কিছু কথিত সাংবাদিক ও রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই চক্রের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন।
তাদের দাবি, সাংবাদিক ইকবালসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এই অনৈতিক কর্মকাণ্ড সমাজে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং যুবসমাজ ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। অতএব, সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।