মুহাঃ মোশাররফ হোসেন:
আল্লাহ তায়ালা এই নশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর এই পৃথিবী সৃষ্টি করে সারা পৃথিবীটাকে সাজানো গুছানোর জন্য সুচারু রুপে বিভিন্ন জীব-জন্তু, গাছ-পালা, পশু-পাখি, জ্বিন এবং মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন।
এর মধ্যে মানবজাতিকে সৃষ্টির সেরা হিসাবেই সৃষ্টি করেছেন। এই মানবজাতিকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য যুগে যুগে নবী রাসুল পাঠিয়েছেন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই পৃথিবী সৃষ্টির পুর্বেই একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করেছেন আর তার হাতেই পুরো পৃথিবীতে ইসলামের আবির্ভাব ঘটবে পবিত্র আল কোরআন তার উপরেই নাযিল হবে এবং সেই কোরআনের আইনেই পুরো পৃথিবীটা চলবে।
এর পরে আর কোনো নবী রাসুল আসবেনা তিনিই হবে প্রথম এবং শেষ নবী, আর সেই প্রতিনিধি হলো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি শুধু মানবজাতির জন্যই নই! সমস্ত নবীদের ও সেরা হবে, আর তিনিই একমাত্র কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সুপারিশের জন্য স্থান পাবেন, এখানে বুঝতে হবে তার স্থান আল্লাহ তাআলা কত উপরে রেখেছেন। আমরা সেই নবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হয়ে এই পৃথিবীতে এসেছি এর চেয়ে সৌভাগ্য আর কিছুই হতে পারেনা। তাই আমরা সেই নবীর শানে বলি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টির পুর্বেই ফেরেস্তাদের ডেকে মানবজাতির কথা বলেছিলেন কিন্তু তারা নিষেধ করেছিলেন শুধু ফেতনা, ফ্যাসাদ করবে তাই, তাও আল্লাহ তায়ালা বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে বলেছেন আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। এবং আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করার আগেই জানতেন যে এই মানবজাতি পৃথিবীতে এসে ফেতনা ফ্যাসাদ করবে, অন্যায় অনাচারে জড়িয়ে পড়বে, একে অপরের দুশমন হবে, অনেক পাপাচারে লিপ্ত হবে, তাই মানুষ সৃষ্টি পর থেকেই সতর্ক করেছেন যে শয়তান তোমাদেরকে ধোঁকায় ফেলবে তোমরা যেন শয়তানের ধোঁকায় পড়ো না। এবং বেহেস্ত/জান্নাত ও দোযখ/জাহান্নাম সৃষ্টি করেন, এতে করে যারা ভালো কাজ করবে সঠিক পথে থাকবে তাদেরকে বেহেস্তে পাঠাবে আর খারাপ কাজ বা অন্যায় অনাচারে যারা লিপ্ত হবে তাদেরকে জাহান্নামে পাঠাবে। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা করলেও তাদেরকে পরীক্ষা স্বরুপ স্বাধীনতা দিয়ে দিছেন যাতে করে তারা ভালো মন্দ বুঝে কাজ করে যেতে পারে, তাতে যে যেমন কাজ করবে সে তেমন ফল পাবে (আল-কোরআন সুরা মুলক আয়াত নং২) শিক্ষার্থীদেরকে যেমন পরীক্ষার হলের মধ্যে স্বাধীনতা দেওয়া হয়। শুধু মাত্র ভিতরে একটা মোবাইলের মত মেমোরি কার্ড ঢুকিয়ে দিয়েছেন যাতে এই মানবজাতি কিয়ামতের দিন অস্বীকার করতে না পারে! এক কথায় এই পৃথিবীটা একটা খেলার ময়দান বা পরীক্ষার হল হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।
এবার আসল কথায় আসি" আমরা পুরুষরা সত্যিই কি মেয়েদের কাছে দুর্বল? আসলে অনেকটা দুর্বল আছি! আমরা জানি মেয়েরা নরম জাতি সামান্যতেই মোমের মত গলে যায়, সাথে আল্লাহ তায়ালা এই মেয়েদের মায়ের জাতি হিসাবে গর্বিত করেছেন, সেই দিক থেকেও উপরে রেখেছেন। বৈজ্ঞানিকরা কোরআন রিসার্চ করে এই মেয়েদেরকে চুম্বকের সাথে তুলনা করেছেন অর্থাৎ মেয়েরা চুম্বক আর পুরুষকে লোহ ধাতুর সাথে আখ্যায়িত করেছেন।
এর কারণ হলো চুম্বক যেমন লোহাকে আকর্ষণ করে ধরে ফেলতে সক্ষম তেমনি মেয়েরা শুধু চুম্বক নই! আগুনের সাথেও তুলনা করেছেন আর পুরুষদের কে মোমের সাথে আখ্যায়িত করেছেন, আগুন এবং মোম পাশা পাশি থাকলে আগুনের তাপে তা অবশ্যই গলে পানি হয়ে যেতে সক্ষম। আসলে মুল কথা হলো মেয়েদের কে সব পুরুষরাই ভয় পাই, ভয় শুধু মারার ভয় না এতে জড়িয়ে আছে আত্মসম্মান, ইজ্জত, সংসারের চাবিকাঠি। একটার সাথে আরেকটা জড়িত আছে। মেয়েরা যেমন অল্পতেই গলে যায় তেমনি সামান্যতেই রেগে যায় আর এদের সাথে যদি পুরুষরা জিদ ধরে বসে থাকে তাহাতে সংসারে অশান্তি আসে। সংসারে অশান্তি হলে, বাচ্চাদের উপর সেই ইফেক্ট পড়ে, আর সেই সংসারে জীবনেও আল্লাহর রহমত আসে না এবং উন্নতির দ্বার বন্ধ হয়ে যায়।
আদিকথায় না গেলে নই তাও যেতে হচ্ছে মানবজাতির সৃষ্টির শুরুতেই এই মেয়েদের কারণেই সারা মানবজাতি আজ কলংকিত, আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে অর্থাৎ আদম আঃ কে সৃষ্টি করে বেহেস্তের ভিতরেই রেখেছিলেন আর এর সঙ্গ দেওয়ার জন্য হাওয়া আঃ অর্থাৎ সেই মেয়ে জাতি আদম আঃ এর পাজর থেকেই সৃষ্টি করেছিলেন যাতে করে এরা নিঃসঙ্গ না থেকে শান্তিতে অনন্তকাল এইখানে জান্নাতে থাকতে পারে। কিন্তু এই হাওয়া আঃ এর ভুলের কারণে অর্থাৎ শয়তানের প্রলোভনে আল্লাহর হুকুম অমান্য করার কারণে বেহেস্ত থেকে এই পৃথিবীতে প্রেরণ করলেন, শুধু ভুলের কারনেই এছাড়া অন্য কোনো কারণে নই! যাই হোক সবই আল্লাহর খেলা, আল্লাহর বিনা ইশারায় কিছুই হয়নি আল্লাহ চেয়েছিল এভাবেই আমি মানবজাতিকে পৃথিবীতে পাঠাবো তাই সেটা মেয়ে জাতি দিয়েই করেছিলেন। মেয়েদের কাছে পুরুষরা সম্মানের দিক দিয়ে, আর ভুলের কারণে রাগের বর্শবর্তি হয়ে অনেক কিছু করতে সক্ষম, নিজেকে অনেক চরিত্রে নিয়ে পুরুষকে বিপদের দিকে ধাবিত করতে পারে সেই ক্ষমতা আল্লাহ তাদের ভিতর দিয়ে দিয়েছেন, তাই অনেক কিছু ভেবেই পুরুষ জাতি মেয়েদের কাছে অনেকটা দুর্বল। এইটা সৃষ্টির শুরু থেকে হয়ে আসছে এবং আগামীতেও হবে ইনশাআল্লাহ। তাই যাদের সঠিক জ্ঞান আছে তারা মেয়েদের সম্মান দেখাতে যেয়ে আত্মসম্মানের ভয় পেয়ে মেয়ে অর্থাৎ বৌদের কাছে দুর্বল থাকে। এটাও হওয়া উচিত কারণ তারাও মানুষ, এতে পুরুষদের পুরুষত্ব কমে যায় না বরং সমাজের চোখে সম্মান আর আল্লাহর কাছে ভালো থাকে, তবে এতে যদি মেয়েরা পুরুষের অবাধ্য হয়ে চলে এবং বেশি কিছু করে ফেলে সেটা সমাজের চোখেও খারাপ আর আল্লাহর কাছে ধরা আর এর বিচার স্বয়ং আল্লাহ একদিন অবশ্যই করবে ইনশাআল্লাহ। আসুন আমরা সবাই মেয়েদের খারাপ কাজে ব্যবহার না করে, দুর্বল না ভেবে সংসার গড়ার জন্য মিলেমিশে একে অপরের পরামর্শে সংসারের সকল কাজ করি। হে আল্লাহ তুমি সকলকে বুঝার তৌফিক দাও (আমিন)
মুহা, মোশাররফ হোসেন।
লেখক, কবি ও সভাপতি প্রাণের মেলা জাতীয় কবি পরিষদ।