
এমদাদুল হকমনিরামপুর প্রতিনিধিঃ
যশোরের মণিরামপুরে পুতনি ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সদর ইউনিয়নের হাজরাকাঠি গ্রামের মো. লুৎফর গাজী (৬০) গত ২২ মার্চ মণিরামপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে আদালতে মামলার প্রেরণ হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় দুই মাস ধরে কারাগারে আটক থাকা লুৎফর গাজীকে নির্দোষ দাবি করে তার সন্তানরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
গত ১১ই মে সন্ধ্যায় মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লুৎফর গাজীর তিন ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. আরিফুল ইসলাম। তারা তাদের বাবার মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন। যেহেতু তারা লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করতে অক্ষম ছিলেন, তাই তাদের খালু মো. কামরুল হাসান রাজা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, “তিন বছর আগে আমাদের বড় ভাইয়ের স্ত্রী মাফিয়া দুই সন্তান—তাসমিম ও তাসিন—কে রেখে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে বাড়ি ত্যাগ করেন। এরপর থেকে তাসমিম (১৩) তার দাদির কাছে বড় হতে থাকে। পারিবারিক বিরোধের কারণে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী তরিকুল ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ঘটনার দিন, ১৭ মার্চ রাত ৮টার দিকে তরিকুল ইসলাম পূর্বশত্রুতার জেরে লুৎফর গাজীকে একা পেয়ে মারধর করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তরিকুল ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে ৯৯৯-এ ফোন করে ধর্ষণের নাটক সাজায়।”
তিনি আরও বলেন, “পরবর্তীতে পুলিশ তাসমিমকে থানায় নিয়ে যায় এবং একইদিন ভুয়া মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করে লুৎফর গাজীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মণিরামপুর থানার এসআই তারা মিয়ার দেওয়া চার্জশিট ও ভিকটিম তাসমিমের মেডিকেল রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে, লুৎফর গাজী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত নন। তা সত্ত্বেও মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন।
সন্তানদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞ আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়, মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে নির্দোষ লুৎফর গাজীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক এবং যেসব ব্যক্তি এহেন মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রে জড়িত, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।