সাজ্জাদ তুহিন নড়াইল প্রতিনিধি :
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সরকারি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জনকে বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মোহাম্মাদ আজিবর, মোহাম্মাদ ইলিয়াছ, ইমান আলী, মোহাম্মাদ ওমর, মোহাম্মাদ হায়দার, আবু সাঈদ, মোহাম্মাদ এনামুল ও মোহাম্মাদ শরিফুল।
৩০ মে (বৃহস্পতিবার) সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার এজহারে বাদির অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কে বা কারা চুরি করে বিক্রি করছেন।
এ-সময় তিনি নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কর্তনকৃত গাছ বোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন দেখতে জব্দ করে। এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই সরকারি খাস জমি থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকাট গাছ কেটে বিক্রি করেছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে মেম্বার ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। কিন্তু পরবর্তীতে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলার আগে অবৈধভাবে গাছ কর্তনের অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কর্তনের অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু না।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তি মালিকদের জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাস জমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি।এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।