
মো. বেল্লাল হাওলাদার: উপসচিব পদে থেকে ফ্যাসিষ্ট সরকারের রোষানলে পতিত হয়ে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন ১৭ বছর যাবৎ পদোন্নতি বঞ্চিত বি.সি.এস প্রশাসন ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা (আইডি: ৬৩০৬) মোহা. আমিনুল ইসলাম। গত বছরের ১৭ আগস্ট বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে তিনি উপসচিব পদ থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পেলেও তাঁর ব্যাচের ৮ জন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে সচিব হয়েছেন। বর্তমান বৈষম্যহীন সরকারের কাছে প্রাপ্য পদোন্নতির আশার দোলাচলে হতাশাগ্রস্থ অত্যন্ত মেধাবী, সততা ও ন্যায়ের প্রতীক চৌকষ কর্মকর্তা মোহা. আমিনুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য অধিদপ্তরে খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে কর্মরত। তিনি গত বছরের ৪ নভেম্বর প্রকল্প পরিচালক পদে যোগদান করেন। তাঁর পদোন্নতি প্রাপ্যতা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি চাকুরি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।
উলেস্নখ্য যে, মোহা. আমিনুল ইসলাম ১৯৬৭ সালের ১৫ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার সদর থানার বড় সন্নাসী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ১৯৮৩ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি, ১৯৮৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও ১৯৯০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯২ সালে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও ২০০৯ সালে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর বি.সি.এস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার পদে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চাকুরীতে যোগদান করেন। এরপর বরগুনা, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর, ডেসা, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, বিপিএটিসি, রাজবাড়ী, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। তিনি চাকুরি জীবনে বিপিএটিসি, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমী, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া তিনি চীন ও অষ্ট্রেলিয়ায় দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ এ ইতিপূর্বে অংশগ্রহণ করেছেন। চাকুরি জীবনে সরকার তাকে যখন যেখানে বদলী/পদায়ন/ প্রেষণে দায়িত্বভার অর্পন করেছেন- তিনি সকল ক্ষেত্রে স্বীয় দক্ষতার সাথে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্বভার পালন করেছেন। তাঁর একই ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জন ইতিমধ্যে সচিব পদে পদোন্নতি পেলেও যুগ্মসচিব পদে থাকায় মানসিকভাবে তিনি ভীষণভাবে হতাশাগ্রস্থ। তাঁর পিআরএল ২০২৬ সালে ১৫ অক্টোবর। এমতাবস্থায়, কর্মজীবনের শেষ সময়ে তাঁর ন্যায্য পাওনা পদোন্নতি প্রদানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়/সরকার আন্তরিক হবেন- তাই সকলের প্রত্যাশা।