
সেলিম মিয়া, রংপুর প্রতিনিধি:
কম খরচে চাষাবাদ ও অল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ায় সরিষা চাষ এখন দেশের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে ফলন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বাজারমূল্য ভালো থাকায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অন্যদিকে, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকারও সরিষা চাষে উৎসাহ দিচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর মহানগরীর রাধাকৃষ্ণপুর এলাকায় জমিতে সরিষার হলুদ ফুলের মেলা যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ এক চিত্র এঁকেছে। মৌমাছির গুনগুন শব্দ আর বাতাসে সরিষার সোনালি দোল কৃষি জমির প্রাণবন্ত দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে।
স্থানীয় কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমন ধান কাটার পর জমি ফেলে না রেখে ২ বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছি। খরচ কম হওয়ায় লাভ ভালো হবে বলে আশা করছি। ফলনও ভালো হয়েছে। সরিষা ঘরে তোলার পর বোরো ধান রোপণ করতে পারবো। এভাবে এক বছরেই তিনবার ফসল উৎপাদন করতে পারছি।”
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সরিষার নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে একদিকে ফলন বাড়ছে, অন্যদিকে পতিত জমির ব্যবহারও বাড়ছে। কয়েক বছর আগেও যে জমি অনাবাদী পড়ে থাকত, সেখানে এখন সরিষার চাষ হচ্ছে। সরিষার খরচ কম এবং চাষাবাদ সহজ হওয়ায় এটি কৃষকদের কাছে লাভজনক ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সরকারি পর্যায়ে সরিষা চাষে ভর্তুকি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু হওয়ায় কৃষকদের উৎসাহ আরও বাড়ছে। সরিষা চাষের মাধ্যমে দেশীয় তেলের চাহিদা পূরণ করে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কৃষকরা বলছেন, “সরিষার চাষে ঝুঁকি কম এবং মুনাফা বেশি। এতে আমাদের আর্থিক সচ্ছলতা আসবে এবং জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।”
সরিষার এই সফলতার গল্প দেশের কৃষিখাতকে আরও সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।