
মোঃ লুৎফর রহমান লিটল,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার আলোচিত স্কুল ছাত্রী পূর্নিমা রানী শীল ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামীকে ঘটনার ২৩ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার পূর্বদেলুয়া নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার জহুরুল ইসলাম (৪২) ওই গ্রামের জিল্লুর রহমান ওরফে বেলালের ছেলে।
এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জেরধরে ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামের অনিল চন্দ্র শীলের মেয়ে ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী পূর্ণিমা রাণী শীল (১২) গণধর্ষণের শিকার হন।
তাকে ধর্ষণের পর একটি কচুক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। ওই সময় তার বাড়িঘর ভাংচুর এবং তার মা, বাবা ও ভাইকেও মারধর করা হয়েছিল। সেই সময় এই ঘটনা দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছিল।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জহুরুল ইসলাম ঘটনার পরই মালয়েশিয়ায় চলে গিয়েছিল। ৩/৪ মাস আগে সে দেশে ফিরে এসে বিভিন্ন স্থানে পলাতক ছিল। স্বজনদের সাথে দেখা করতে শুক্রবার রাতে সে নিজ বাড়িতে আসে। এরপর গোপন সংবাদ পেয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্নিমা রানী শীল ধর্ষণের ঘটনায় ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর ভিকটিমের বাবা অনিল চন্দ্র শীল বাদী হয়ে ১৬জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্তের পর পুলিশ ১১জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন। বাদীপক্ষের সাথে সমঝোতায় আলতাফ হোসেন নামে এক আসামী মামলা থেকে রেহাই পায়।
পরবর্তিতে ২০১১ সালের ৪ মে আদালত বাকি ১০ আসামীর সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার রায় দেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে র্যাব ও পুলিশের অভিযানে আলতাফ হোসেন, আব্দুল জলিল, লিটন, আব্দুর রউফ, আব্দুল আলিম, হোসেন আলী ও ইয়াছিন আলী নামে ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হন জহুরুল ইসলাম।
এরা সবাই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। বাকি দুইজন বাবলু ও আব্দুল মোমিন এখনো পলাতক রয়েছেন। আসামীরা সবাই উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের পূর্বদেলুয়া গ্রামের বাসিন্দা।