
মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ
একটি দু’টি নই,প্রায় অর্ধশত পরিবারের শতাধিক মানুষের চলাচলের রাস্তা অর্থ ও ক্ষমতাবলে দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময় যাবত বন্ধ করে রেখেছেন মোঃ বজলুর রহমান ওরফে বোজো। স্থানীয় শালিস,ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ,এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করলেও পায়ে হাটা রাস্তার দেখা পাননি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।অথচ,ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী তাদের বর্তমান বাড়িঘর এখানে না হলেও অভিযুক্ত বজলুর পিতা মৃত রহিম সরদারের নিকট হতে জমি ক্রয়ের সময় নির্ধারন করা ছিলো যে,এখানে বসতি বাড়লে রাস্তার জন্য অবশ্যই জায়গা ছাড়া হবে। স্থানীয়রা বলছেন,বসবাসের অনুপযোগী হওয়া সত্বেও তাদের রাস্তা মিলবে পাকা সড়কের সাথে সে মর্মেই এক এক করে সমস্ত জমি মৃত রহিম সরদারের নিকট হতে এ সমস্ত ভুক্তভোগীরা ক্রয় করেছে।
তথ্য আছে,ইতিপূর্বে কয়েক দফায় মিমাংসার চেষ্টা,এমনকি যে জমি বরাবর রাস্তা যাবে সে জমি বজলু ও তার শরীকদের নিকট হতে দ্বীগুন দামে কিনতে চাইলেও কোনো ভাবে রাস্তা দিতে নারাজ এই বজলু। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ হওয়ায় অভিযুক্ত বজলু ঐ দাবীকৃত রাস্তার শুরুতে এস্কো ভাড়া করে এনে মাটি কেটে বানিয়েছেন ডোবা,যেখানে বছরে একবার বজলু পাট পচানো কাজে ব্যবহার করেন।
নিকৃষ্টতম এ ঘঠনার দৃশ্যপটে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের মৃত রহিম সরদারের ছেলে মোঃ বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন চলাচলে বিপাকে পড়া ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনের তথ্য ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ বলছে,মণিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর মৌজার উত্তরপাড়ার বসবাসের অনুপযোগী নিচু ঐ জমিতে এক সময় মাঠ আর বাগান ছাড়া কিছুই ছিলোনা।ঐ জমির একক মালিক ছিলেন অভিযুক্ত বজলুর রহমানের পিতা মৃত রহিম সরদার।
সে সময় মৃত রহিম সরদার অধিক জমির মালিক হওয়ায় তার কথামতই মণিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর মৌজার জেএল নং ৭৮ এর কয়েকটি দাগের একাংশের জমি স্থানীয় আবু কালাম,নূরো,মোসলেম সহ কয়েকজনের কাছে রাস্তা দিবে। তার কথা মোতাবেক,তার ওয়ারেশগনও অবশ্যই রাস্তার জন্য জমি ছাড়তে বাধ্য থাকিবে,সে মোতাবেকই পানির নিচে থাকা ঐ জমি ক্রয় করে রেজিস্ট্রি হয় বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী প্রায় ৫০টি পরিবারের সদস্যরা।সাংবাদিকদের দেখে আবেগে জড়িয়ে ধরে অনেকেই চেয়েছেন তাদের দৈনন্দিন জীবনের তাগিদে রাস্তায় উঠার জন্য একটি পায়ে হাটা রাস্তা।তাদের অভিযোগ রহিম সরদারের মৃত্যুর পর হতে এ পর্যন্ত মৃতের ৫ ছেলের গনী রহমান,বেনিসুর রহমান,আনিচুর রহমান,জব্বার রহমান রাস্তাটি বাস্তবায়নের পক্ষে থাকলেউ তাদের একটি মাত্র ভাই মোঃ বজুলুর রহমান বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।
প্রকাশ আছে যে কাশিমনগর মৌজার ৪নং রেজিস্ট্রারের ২নং সিটের প্রত্যায়ন পত্রে সীমা রেখায় ১৭৯ ও ২৮৯৯ দাগ বরবর হলুদ রং উল্লেখ করে দিয়েছেন একজন ১ম শ্রেনীর সার্ভেয়ার।
অভিযোগ কারীদের সিরিয়াল লম্বা হলেও এক বৃদ্ধা মহিলার হৃদয়স্পর্শী অভিযোগে বৃদ্ধার চোখের পানির সাথে কয়েকজন সাংবাদিকের চোখের কোনে টলমল করছিলো পানি! বৃদ্ধার অভিযোগ, একমাস মতো আগে তার স্বামী অসুস্থ্য হলে হাসপাতালে নিতে বিলম্ব হলে মৃত্যু বরন করে।মৃতেট জানাজা ও দাফনের জন্য খাটিয়া নিযে যাওয়ার রাস্তা পাচ্ছিলেন না। চারিদিকে পানি থাকার জন্য রাস্তার অভাবে বাড়িতে মানুষও যেতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিলো!আমরা কি মানুষ না,ঐ বোজোর(বজলুর রহমান) কারনে আমরা আর কতকাল এভাবে বাঁচব! এ কথা বলেই,হাওমাও করে কেঁদে উঠলেন বয়স্ক বৃদ্ধা নারী।
ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেতে পারেনা,একটা বিপদ হলে এ্যাম্বুলেন্স আসতে পারেনা,চাষের ফসল বাড়িতে আনতে পারিনা,প্রায় শতাধিক লোকের বাড়ির দিকে রাস্তা হতে ১টি রাস্তা নাই যে ভ্যান গাড়ী ঢুকবে! এ সমস্ত সমস্যায় শালিস হলে অমানবিক বজলু স্কো ভাড়া করে এনে রাতারাতি পুকুর খুড়ে ভুক্তভোগীদের কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গণস্বাক্ষর সহ মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেনের সুপারিশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিলেও একমাত্র বজলুর নিজের জমি দাবী করে রাস্তা হতে দিবেনা ঘোসনা দিয়ে বলেছেন,যে রাস্তা করতে আসবে আমার ছেলে সেনাবাহিনীর চাকরি করে তার দিয়ে ব্যাবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেনও ভুক্তভোগীদের পক্ষ নিয়ে বলেন, বজলু একাই সমস্যা।ঐ রাস্তাটা হলে পানি নিশ্কাসনের জন্য একটি ড্রেন নির্মানের কথা হয়ে আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না এ বিষয়ে কাশিমনগর ইউনিয়নের প্রশাসক’কে দায়িত্বর্পনের পর সরেজমিনে গেলে প্রশাসক সেলিম রেজার সাথেও অশোভচারন করেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দায়িত্ব পাওয়া মণিরামপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা নিজেই।



