স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
যশোরে অর্থকারী ফসল পান ও পান চাষিদের রক্ষার দাবিতে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৯ শে নভেম্বর) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ পান চাষি সমিতি, যশোর শাখা কৃষি উপদেষ্টার নিকট ১০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেওয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ) ।
স্মারকলিপি প্রদান কালে উপস্থিত ছিলেন পান চাষি সমিতি সদর উপজেলার আহ্বায়ক তিমির সেন, অভয়নগর উপজেলার সদস্য সচিব শেখ নূর আলম, পান চাষি সমিতি যশোরের উপদেষ্টা, জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সহ- সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, সংগঠনের উপদেষ্টা ও জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম উর রহমান, উপদেষ্টা নাজিম উদ্দিন, কৃষক নেতা মিজানুর রহমানসহ একাধিক পান চাষি।
সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে মিছিল সহকারে পান চাষিরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু ও তসলিম উর রহমান। স্মারকলিপিতে পান চাষি সমিতি যশোর বলেন, পান আমাদের একটি অর্থকারী ফসল। দেশের অধিকাংশ জেলায় পান চাষ হয়। পান চাষের সাথে শুধু পান চাষিদের জীবন-জীবিকা যুক্ত নয়, পান চাষের সাথে অসংখ্য খেতমজুর, পাটকাঠি, বাঁশের মালিক এবং পান ব্যবসায়ীরাও যুক্ত।
আমাদের পান বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা যুক্ত হতো যার পরিমাণ প্রায় ৩ থেকে ৪শ’ কোটি টাকা।
পান চাষ বেশ ব্যয়বহুল। চাষে ব্যবহৃত উপকরণে দাম বৃদ্ধি ও খেত শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে পান চাষের ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে সরকারিভাবে রপ্তানি শুল্ক গত ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি কেজিতে ১ ডলারের স্থলে ৫ ডলার বৃদ্ধি করায় রপ্তানিকারী দেশসমূহ আমাদের পান নিচ্ছে না। পানের বাজার দরের ভয়াবহ পতন হয়েছে ফলে অর্থকারী ফসল পান এক মহাসংকটে পড়েছে। পান চাষিরা দিশেহারা। ব্যাংক ও এনজিও ঋণের দায়ে ভিটা ছাড়া।
এমতাবস্থায় অর্থকারী ফসল পান ও পান চাষিসহ অসংখ্য মানুষকে রক্ষা করতে ১) পান রপ্তানিতে বৃদ্ধিকৃত শুল্ক বাতিল করে, রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাধা সৃষ্টিকারী সকল আইন-কানুন দূর করা।২) আপাদ কালীন সময়ের জন্য পান চাষিদের এনজিও ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখা।৩) শুধুমাত্র পান চাষের উপর নির্ভরশীল খেতমজুরদের জন্য ত্রাণে ব্যবস্থা করা।৪) শুধুমাত্র রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা না দিয়ে উৎপাদক পান চাষিদেরও প্রণোদনা দেওয়া।৫) পান চাষের সকল উপকরণের দাম কমানো
৬) পান গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা, আধুনিক পান সংরক্ষণাগার ও পান শিল্প তৈরী করা।
৭) পান চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পান চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা
৮) পান বরজের জমি থেকে অধিক খাজনা নেওয়া বন্ধ করা
৯) পান চাষ বীমা চালু করা ও
১০) জাতীয় পান বোর্ড চালু করার দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।