
মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ
মণিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারস্থ্য একটি ভাড়া বাড়ি হতে শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯টার পরপরই ব্রাক বাংলাদেশ এনজিও কর্মী মোছাঃ বন্যা আক্তার (৩২) নামের এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে মণিরামপুর থানা পুলিশ। মৃত বন্যা শ্যামকুড় ইউনিয়নের ময়নাবাড়ি এলাকার ডেন্টিস্ট মোঃ মাহবুবুর রহমানের ছেলে মোঃ মেহেদী হাসান তপুর ২য় পক্ষের স্ত্রী ও রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানার চরানধবেমান গ্রামের আবুল কালাম মুন্সী ওরফে বিশে মুন্সীর মেয়ে।
মৃত বন্যা ও তপুর ২ বছর ৮ মাস বৈবাহিক সম্পর্কের ফসল ১বছর ৭ মাস বয়সী মেয়ে তুবাকে পাশের বাসায় পাওয়া গেলেও এখনো পর্যন্ত বন্যার স্বামীর খোজ না পেয়ে ময়নাতদন্তের আত্মহত্যার রিপোর্টের সাথে মরদেহ নিয়ে মণিরামপুর থানা ত্যাগের মুহূর্তে বন্যার স্বামী উপজেলার শ্যামকুড় ময়নাবাড়ি এলাকার মোঃ মাহবুর রহমানের ছেলে পলাতক মেহেদী হাসন তপুর বিরুদ্ধে বোন হত্যার অভিযোগ দিয়ে উচ্চ আদালতের স্বরনাপন্ন হবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়ে গেছেন মৃত বন্যার ভাই আব্দুর রাজ্জাক সহ পরিবারের একাধিক সদস্যরা।
তথ্য মোতাবেক, মৃত নারী ও অভিযুক্ত স্বামী দু'জনেরই এটা ২য় সংসার ছিলো। বন্যার আগের পক্ষের স্বামী এখন প্রবাসে,সেখানে ১৩ বছরের একটি ছেলে আছে। তবে সেখানের সম্পর্ক চুকিয়ে ২ বছর ৬/৭মাস অভিযুক্ত তপুর সাথে প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ে করলে গোয়ালন্দে বন্যার পিতার বাড়ির সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও তুবা(মেয়ে) হওয়ার পর থেকে মোটামুটি যাতায়াত হচ্ছিল তাদের মধ্য। সর্বশেষ গত রবিবারেও নগদ ২০,০০০/- (কুড়ি) হাজার টাকা দিয়ে যায় বলে এ সমস্ত তথ্য নিশ্চিত করেছে মৃত বন্যার ছোট বোন ইনমুন নাহার বর্ষা।
শুধুই এ ২০ হাজার নই! বোন বর্ষা ও ভাই আঃ রাজ্জাক জানান,আমাদের বোনকে প্রায়ই টাকার জন্য মারধর করতো তপু! বন্যার ব্যাবহারিক হোন্ডা বাইকটি বিক্রি করে নিয়েছে স্বামী তপু। এ ছাড়াও কয়েকজনকে গ্রাহক বানিয়ে বন্যার কর্মরত ব্রাক বাংলাদেশ এনজিও হতে লোন তুলে ৮ লক্ষ,নগদ ৪ লক্ষ,৩টি স্বরনের চেইন,স্বর্নের ১ জোড়া হাতের বালা ইতিপূর্বে ভক্ষন করেছে অভিযুক্ত স্বামী তপু।টাকা চেয়ে না পেয়ে তপু বন্যার ব্যাক্তিগত ব্যাংক একাউন্টের ডেভিড কার্ড ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেই স্বামী তপু। এখানেই শেষ ছিলোনা,নিজের বোনকে হারিয়ে হতবিহ্বল হয়ে বর্ষা বলতে থাকেন,আপা প্রায়ই ফোন করে টাকা চাইতো!তার স্বামী টাকার চাপ দিচ্ছে বলে আপা প্রতিদিন বলতো! গত কয়েক মাস যাবত বন্যার চাকুরীর প্রতিমাসের বেতনের টাকা পর্যন্ত ছিনিয়ে নিতো মেহেদী হাসান তপু।
মৃত বন্যার পরিবার অভিযোগ তুলছে,এটা পরিপল্পিত হত্যা। তপুর ১ম স্ত্রীর যোগসাজশে বন্যাকে তপু হত্যা করে পালিয়েছে। কিন্তু এটাকে আত্মহত্যা বলে ভুয়া ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে তপুকে বাচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ময়না বাড়ি এলকার তপুর বাবা বিশিষ্ঠ দন্ত চিকিৎসক মোঃ মাহবুর রহমান।এ ঘঠনায় মণিরামপুর থানা পুলিশের প্রতি অনস্থা প্রকাশ করে বন্যার মামা আইনজীবীর সহকারি আবুল কালাম এক ভিডিওতে বলেছেন,এখানকার স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে আসামিপক্ষের লেনদেনে থানা পুলিশ হত্যার গঠনাকে আত্মহত্যা প্রচার করলেও আপনারা সঠিক সংবাদ প্রচারে সহযোগিতা করলে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।
সরেজমিনের তথ্য বলছে,ভাড়া বাড়িতে সিসি থাকলেও কোন রেকর্ড হয়না বলেন ঐ বাড়ির মালিক বিশ্বজিৎ দাস !
বন্যার ঘরের সামনের ভাড়াটিয়া সুমি(ছদ্মনাম) জানান,প্রতি সপ্তাহে বন্যা ও তপু এ বাসায় আসতো ২দিন থেকে চলে যেতো। তপু স্থানীয় হওয়ায় আমরাও কিছু বলতাম না। ঘঠনার দিন শুক্রবার কেশবপুর হতে তারা একসাথে বাসায় আসছিলো।তুবাকে কোলে নিয়ে সুমি বলতে তাকেন মেয়েটি আমার মেয়ের সাথে খেলছিলো,কিছুক্ষণ মা'কে না পেয়ে মেয়েটি কাঁদতে থাকলে বাইরে এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ,জানালা দিয়ে ফাঁকা করে দেখি ভাবী (বন্যা) ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে।পরে লোকজন ডেকে তাকে নামানো হয়।
মণিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ বাবলুর রহমান খান ঘঠনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্যা মর্গে পাঠালে তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন না পাওয়ায় মণিরামপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে।
এদিকে থানা পুলিশের উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্য বন্যার স্মার্ট ফোন পুরোটায় রিসেট(ডিলেট) থাকায় এখনো কোন ক্লু পাওয়া যায়নি তবে এ বেপারে আমাদের তদন্ত চলছে বলে এ তথ্য নিশ্বিত করেছেন মণিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ বাবলুর রহমান খান।