
মনিরামপুর প্রতিনিধি:
যশোরের মনিরামপুর ভূমি অফিস দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। অফিসের নৈশ প্রহরী আসাদও সেখানে যেন একজন কর্মকর্তা বনে গেছেন। সাধারণ কৃষক থেকে ব্যবসায়ী—সবাই তাকে ‘স্যার’ না বলে সম্বোধন করলে তিনি অপমান বোধ করেন।
গত বুধবার গালদা গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান নামজারির কাজে ভূমি অফিসে গেলে দেখেন, তার ফাইল দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নৈশ প্রহরী আসাদের টেবিলে পড়ে আছে। কাগজপত্র পর্যালোচনা শেষে আসাদ দুই হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় দিনভর অপেক্ষা করে খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। পরদিন আবার গেলে ফাইল ছাড়ানো হলেও তা আটকে যায় আরেক কর্মচারীর টেবিলে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এ অফিসে এখন সবাই কর্মকর্তা। টাকা ছাড়া কোনো ফাইল এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে নড়ে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রধান শিক্ষকও মন্তব্য করেন,“মনিরামপুর ভূমি অফিস এখন পুরোপুরি দুর্নীতির রাজ্যে পরিণত হয়েছে।”
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব অনিয়ম ও ঘুষের কারবার চললেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাসুদুর রহমান কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। তার নীরবতা ও তদারকির অভাবেই নৈশ প্রহরীর মতো কর্মচারীরাও ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন।
এ বিষয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর একটি স্থানীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর এসিল্যান্ড মোঃ মাসুদুর রহমান জানান,
“গতকাল রাতে রিপোর্টের বিষয়ে অবগত হয়েছি। আজ (১৪ ই সেপ্টেম্বর) সকালে অফিসে এসেই কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট নৈশ প্রহরীকে দিনের বেলায় অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও, আমার কর্মকালীন সময়ে ভূমি ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রকার হয়রানির তথ্য পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এ মর্মে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগের সহকারী কমিশনার নিয়াজ মাখমুদ দায়িত্বকালীন সময়ে ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং ভূমি সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।