
এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ
ঘরে আমরা ঘুমাই ছিলাম, হঠাৎ মেয়েটা মা মা বলে চিৎকার করে বলে ভাইকে কিসে যেনো কামড় দিছে। সাপটা কামড় দিয়ে চলে যাচ্ছিলো দেখেই বুঝেছি কামড় দিছে।
ওঝা না পারায় ঐ সময় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাঃ পাইনি! যশোরে যাওয়ার পথে চালকিডাংগায় আমার জান পাখিটি উড়ে গেছে! মণিরামপুর সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে বার বার অচেতন হয়ে আবারও উঠে কাঁদছে মাত্র ৪ বছর বয়সী শিশু আজিমের মা।
গত রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মণিরামপুর পৌরশহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন বাধাঘাটায় ১টি ভাড়া বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় ৪ বছরের আজিম ও ১০ বছরের হালিমাকে (কালাচ) সাপ কামড় দিলে তাদের মা ছেলে আজিম,মেয়ে হালিমাকে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে ডাঃ না পেয়ে সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে শিশু আজিমের মৃত্যর ঘঠনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে সেবা না দেওয়ার অভিযোগের তীর ছুড়ে দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার সহ সাধারণ জনগনের উপজেলা বাসীর বৃহৎ একটি অংশ।
অনেকে বলেছেন,জ্বরাক্রান্ত রোগি নিয়ে গেলও নাকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
জিয়াউর রহমান জিয়া নামে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন,২৪ ঘন্টা জরুরী বিভাগ খোলা থাকলেও সেবা পাওয়া যায়না। ঔষধ থাকে তো ডাক্তার থাকেনা,ডাক্তার থাকে তো ঔষধ থাকেনা।
শুধু এই সাপে কাটা রোগী না! এর আগেও বহুত অভিযোগ আছে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও,আউটডোরে সকালে ডাক্তার না আসা,ক্লিনিকের লোক ডাক্তারের চেম্বারে বসা,প্যাথলজিস্ট আনিচের এক পদে ২ যুগধরে রমরমা ক্লিনিক বানিজ্য,রোগীদের খাবারের নিম্নমান,ডাঃ ও নার্সদের ইচ্ছেমত ডিউটি করা সহ ঘোর সব বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানী টিম তাদের কাজ করে চলেছে নিজস্ব গতিতে।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঘোর অভিযোগ আসছে সামনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।
তবে সাপে কাটা রোগীর পরিবারের অভিযোগকে অস্বীকার করে গেলো রবিবার দিবাগত রাতে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তত্বাবধায়ক ফয়েজ আহম্মেদ ফয়সাল জানান,ঐ রাতে কোন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসেননি।
এদিকে সাপে কাটা শিশু মৃত্যুর ঘঠনার আলোচনা সমালোচনার বিপাকে পড়ে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না ইতিমধ্যে বুধবার (৩সেপ্টঃ) ২০ ভয়েল “এ্যান্টিভেনাম”(বিষক্রিয়া নিরোধ) মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ সহকারে কথা বললে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানালেন,জনসাধারনের কথা চিন্তা করে সাপের বিষক্রিয়া নিরোধ এন্টিভেনাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহ করা হয়েছে।সকলকে সচেতন হয়ে সাপে কাটা রোগীকে বিলম্ব না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার অনুরোধ করেন।