Tuesday, October 14, 2025

মণিরামপুরে রাস্তা নির্মাণে ব্যা’পক অ”নিয়’ম

Date:

Share post:

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ

রাস্তার বামে ডানে শুধু পানি আর পানি। বড় বড় ঘের,পুকুর ও ছোট ছোট ডোবা (খানা) আর মাঝে মধ্য গুটি কয়েক পরিবারের বসতঘর। এত বেশি পানি যে ফসল ছাড়ায় এ সমস্ত পরিবারের সদস্যরা মাছের ঘেরে সময় কাটায়।

১২ মাসের ক্যালেন্ডারের পাতার ১০(দশ) মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বাকি দুই মাসে যদি অতিবৃষ্টি বা বন্যা দেখা দিলে বাড়িঘর তলিয়ে পাকা রাস্তা পানিতে বিলীন হয়ে একাকার হয়ে যায়।

জলাবদ্ধতায় থাকা একাধিক গ্রামের মানুষদের  যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম চিনেটোলা হতে  নেহালপুর পর্যন্ত একটি মাত্র পাকা রাস্তা। আজকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কয়েক গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র রাস্তা নির্মানে শোচনীয় দুরবস্থা। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ১৪নং দূর্বাডাংগা ইউনিয়নের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম চিনেটোলা বাজার হতে কোনাখোলা বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ৮ কিঃমিঃ রাস্তা নির্মানে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাখার বে-খেয়ালী তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যশোর চাচড়া এলাকার বনান্তর এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে একাধিক কারচুপি ও তড়িঘড়ি কাজের অভিযোগ উঠেছে।

নিম্নমানের ইটের খোয়া,হলুদ রংয়ের খোয়ার সাথে পুরাতন কার্পেটিংয়ের মিক্সার,কোথাও কোথাও কাদামাটির মিশ্রণ,যত্রতত্র ডলেঘষে উপরে ৩” (ইঞ্চি) বালির প্রলেপ,ত্রুটিপূর্ণ কাজে তড়িঘড়ি সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বনান্তর এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। আশ্চর্য্য জনক বিষয় হলো সরেজমিনে সাধারন মানুষের অভিযোগ,কর্তৃপক্ষের কাজ ও নিম্নমানের কাচামালের চিত্র পাওয়া গেলেও উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দাবী স্বচ্ছতা রেখে কাজ চলছে।

এদিকে  এলকাবাসী ক্ষোভ জানালেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে দ্রুততার সাথে কাজ করে চলেছে কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বনান্তর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু সাঈদ বিত্তশালী হওয়ায় মোটা অর্থ দিয়ে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি)কর্মকর্তা মোঃ ফায়সাল আহম্মেদ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মুখ বন্ধ রাখাতে তথ্য চেয়ে আবেদন করলেও অর্কাষ্টন কপিল,হিসাব রক্ষক মুক্তার হোসেন ও উপজেলা কর্মকর্তা কেউ তথ্য দিতে রাজি হননি।

‎সবচেয়ে বেশি লক্ষনীয় সমস্যা চিনেটোলা বাজারের দূর্বাডাংগা রোড হতে নেহালপুর পর্যন্ত সড়কের ২ পার্শে দিয়ে ১ হতে ৩ মিটারের মধ্য অস্যংখ্য পুকুর,ঘের থাকলেও চোখে পড়েনি কোন গাইডল/প্যালাসেটিংয়ের গাথনী বা পিলার। এদিকে এলজিইডির সংস্কার আইন ও সওজের(সড়ক ও জনপদ) রাস্তা নির্মান বিধীমালায় পরিষ্কার লেখা আছে জনগনের সুবিদার্থে পাকা রাস্তা করনে কোন রকম কারচুপি এবং খামখেয়ালীর সত্যতা প্রমানিত হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল সহ অর্থদন্ড প্রদান করা হবে।

‎উপজেলা প্রকৌশলী শাখার সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বান্ডেল লেনাদেনার চাপে ভুক্তভোগী জনগনের সেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কেউ কোন তথ্য না দিলেও গোপন তথ্য মোতাবেক, ৮কিঃমিঃ রাস্তার ৫ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দের চলতি ঐ কাজের একটি বড় অংশ উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা ফয়সাল আহম্মেদ,হিসাবরক্ষক মুক্তার হোসেন ও অর্কাষ্টন কপিল সাহেবের পকেট ভারী করেছে। সরেজমিনের ফুটেজে দেখা যাচ্ছে রাস্তার কোনাখোলা বাজারে ম্যাগাডাম চলাকালে নিম্নমানের ইটের খোয়ার উপর দাড়িয়ে তদারকি করছেন অর্কাষ্টন কপিল ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক ব্যাক্তি। সন্দেহ হওয়ায় কোনাখোলা বাজার হতে চিনেটোলা অভিমুখে বেশ কয়েকটি স্থান থেকে খোয়ার স্যাম্পল নিয়ে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গেলে উপজেলা(এলজিইডি) কর্মকর্তাকে পাওয়া গেলোনা। পরবর্তীতে সহকারি ইন্জিনিয়ার(এসও) মোঃ খালেকুজ্জামান ও হিসাব রক্ষক মুক্তার হোসেনের কাছে কাজের নিম্নমান নিয়ে কথা বলতে গেলে মুক্তার হোসেন সাংবাদিকদের হেনস্থার চেষ্টা করেন। বিগতদিনে নিজেকে সৈরাশাষক বংশীয় শেখ সেলিমের জামাই দাবী করা হিসাবরক্ষক  মুক্তার হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে তথ্যর বদলে বলেন রাস্তা দেখা শোনার কাজ আমার না।কিন্তু বেশ আগে উপজেলার ঝাপা ইউনিয়নের চন্ডিপুর সরকারি পুকুরের সংস্কার কাজ দেখা শোনার জন্য প্রাইয় দেখা গেছে মুক্তার হোসেন খুড়িয়ে খুড়িয়ে চন্ডিপুর স্কুল মোড় ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ফ্যাসিস্ট সামসুল হল মন্টুর সাথে বহুবার বৈঠক করেছেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে মুঠোফোনে আবু সাঈদ জানান,আমার জানামতে নির্মানকৃত সড়কের কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বনান্তর এন্টারপ্রাইজের মালিক  আবু সাঈদের সাথে তাল মিলিয়ে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা ফয়সাল আহম্মেদ নিজেও কাজ ভালো হচ্ছে বলে জানান। সংবাদ প্রস্তুতের জন্য তথ্য চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪দিন পর উপজেলা কার্যালয়ে গেলে তখনও ফয়সাল আহম্মেদকে অফিসে না ফোন করলে তিনি কোন তথ্য দিবেন না বলে হুমকি দিয়ে ফোন কেটে দেন।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে সেই কল রেকর্ড রীতিমত সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাব সহ একাধিক সাংবাদিক এ বিষয়কে ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করেছেন।
‎এ বেপারে যশোর জেলা প্রকৌশল (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষের স্বরনাপন্ন হলে তথ্যের আবেদন করতে বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এমনটাই জানিয়েছেন জেলা প্রকৌশলী (এক্সএন) কর্মকর্তা (এলজিইডি)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মণিরামপুরে আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

‎মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ সমন্বিত উদ্যোগ,প্রতিরোধ করি দূর্যোগ! এ প্রতিপাদ্যকে বাস্তবায়নে সারা দেশের ন্যায় যশোরের মণিরামপুরে আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস...

আজ ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হল বিজয়া সম্মেলনী

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের বিষ্ণুপুর এর আমতলায় জেলা...

রৌমারীতে ক্লাস চলাকালিন সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানব’বন্ধন

লিটন সরকার রৌমারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : রৌমারী উপজেলার বাইটকামারী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস চলাকালিন সময়ে মানববন্ধন করানোর...

বগুড়ায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়া সদর উপজেলার বারুইপাড়া এলাকায় “বারুইপাড়া সোনালী উন্নয়ন সংঘ”-এর উদ্যোগে “বৃক্ষ বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার...