এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ
ছোট্ট একটি সুখী পরিবার,সদস্য ৩ জন। ফরহাদ হোসেন তার স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়সী কন্যা সন্তান মাধ্যমিকে পড়া কিশোরী ইফা।
বৃহঃবার অফিস শেষে হয়তো পরিবারকে সময় দিতে প্রাইভেট কারের স্ট্যারিংয়ে ফরহাদ নিজেই পেছনের ছিটে মা ও মেয়ে, ৩ জনের এই আনন্দময় ভ্রমণের গন্তব্য হঠাৎ থমকে গেলো। মুহূর্তে একটি পরিবারের স্বপ্ন চুরমার করে দিলো সড়ক দূর্ঘটনা! এতটাই হৃদয়বিদারক ঘটনা যে এ প্রতিবেদন প্রস্তুতেও বারবার থমকে যেতে হয়েছে চোখে পানি চলে আাতেই।
তথ্য সংগ্রহে স্পট পরিদর্শন ও প্রাইভেটকারের দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ছবি বলে দেই সংঘর্ষের আকার কেমন ছিলো।কতটা আঘাত পেলে ইফার এ মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে! তাইতো আহত বাবা-মায়ের আর্তনাথে হাসপাতালে এক শোকের ছায়া নেমে আসছিলো।
মৃত মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ফরহাদের স্ত্রী আহাজারিতে বলছে,ইফাকে ফিরিয়ে দাও খোদা আমাকে নিয়ে যা"আমার ইফাকে ফিরিয়ে দাও! যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মণিরামপুর খৈইতলা নামক স্থানে কেশবপুর গামী একটি লাল প্রাইভেট কারের সাথে যশোর দিকে যাওয়া অজ্ঞাতনামা দ্রুতগামী একটি কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষের ভয়াবহ সড়ক দূর্ঘটনায় চিকিৎসারত অবস্থায় ইফা (১৩) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
আহত হয়েছে নিহত ইফার পিতা একই প্রাইভেটকারে থাকা হেমায়েত হোসেনের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৭) ও ফরহাদের স্ত্রী স্বপ্নীল (৩৫)। গত রাতের মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ও আহত সকলেই একই পরিবারের বাবা-মা-সন্তান নড়াইল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড চৌরাস্তার ঐ বাসিন্দারা শুক্র ও শনিবার ছুটি পেয়ে আত্বীয় বাড়িতে যাইতে ছিলো বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে,বৃহঃবার ২১শে আগষ্ট আনুমানিক রাত ১০টা ৪৫ মিঃ দিকে ১টি লাল রংয়ের প্রাইভেট কার(ঢাকা মেঃ গ ২১-৭০৯১) মণিরামপুর হতে কেশবপুর দিকে যাওয়ার সময় খৈইতলা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অজ্ঞাতনামা কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে প্রাইভেট কারটি রাস্তার কয়েক ফুট নিচে পড়ে যায়।
মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা দ্রুততার সাথে প্রাইভেটে থাকা ভিকটিম একই পরিবারে কিশোরী ইফা (১৩),মোঃ ফরহাদ হোসেন (৩৭) ও স্বপ্নীলকে (৩৫) মারাত্বক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে প্রাইভেট কার ও কাভার্ড ভ্যান উভয়ের বেপোরোয়া ড্রাইভিংয়ে একটি পরিবারে স্বপ্ন বিলীন হওয়া দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে কয়েকজন প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান।
যশোর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার ফরহাদ ও স্বপ্নীলের কন্যা সন্তান ইফা'কে(১৩) মৃত ঘোষণা করে। আহত দম্পতির অবস্থাও আশঙ্কাজনক জানিয়ে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান,নিহত ইফার মাথায় গুরতর আঘাতের কারনে অতিরিক্ত রক্তক্ষরন হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃত দেহের আইনী প্রক্রিয়া চলমান থাকার পাশাপাশি দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে মণিরামপুর থানা পুলিশ।তবে ঘাতক কাভার্ড ভ্যানটির ড্রাইভার দ্রুততার সাথে পালিয়ে যাওযায় আটক করা সম্ভব হয়নি তবে দূর্ঘটনা স্থল থেকে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া লাল রংয়ের প্রাইভেট কারটি মণিরামপুর থানা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে এ মর্মে তথ্য নিশ্চিত করেছেন মণিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ বাবলুর রহমান খান।