
অফিস ডেস্ক:
যশোরের অভয়নগরে প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক লিমন শেখ (২৬) হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মূল আসামীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ছিনতাইকৃত ভ্যানের যন্ত্রাংশ ও চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ১১ আগস্ট রাত নয়টার দিকে লিমন শেখ প্রতিদিনের মতো ব্যাটারি চালিত ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও আর ফেরেননি। পরের দিন সকালে শ্রীধরপুর ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রামের ফরাজীপাড়া-বিলপাড়াগামী কাঁচা রাস্তার পাশে স্থানীয়রা একটি জিকে গাছে কাপড় দিয়ে বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে এবং নিহতের বাবা আবুল কাশেম শেখ তার বড় ছেলে লিমনের লাশ শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, দুর্বৃত্তরা ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে লিমনকে ভাড়া করে নির্জন স্থানে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর তার ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লিমনের বাবা আবুল কাশেম শেখ অভয়নগর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রুজু হয় এফআইআর নং-১৩, তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৫।
যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই (নিঃ) মো. বায়েজীদ মোল্লাকে। বিশেষ টিম গঠন করে পুলিশ প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০ আগস্ট সকালে নওয়াপাড়া শিল্প শহরের নুরবাগ এলাকা থেকে মূল আসামী মো. বিল্লাল হোসেন (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল হত্যার দায় স্বীকার করে জানায়, ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে লিমনকে ভাড়া করে নিয়ে যায়। পরে নির্জন স্থানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গাছে বেঁধে রেখে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়। তার দেওয়া তথ্যে বিল্লালের নিজ বাড়ির ঘরের মেঝে খুঁড়ে ভ্যানের বডি, চাকা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া অভয়নগর ও খুলনার ফুলতলায় পৃথক অভিযানে বিক্রি করা চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়। এ সময় ব্যাটারি ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত লিটন, আসানুর ও সঞ্জয় নামের আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ছিনতাইকৃত ভ্যানের যন্ত্রাংশ ও চারটি ব্যাটারি। তবে নিহত লিমনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি আসামী বিল্লাল বন্ধ করে ফেলে দেয় বলে জানিয়েছে।
অভয়নগরে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতারের ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।