
আশিক বিশ্বাস (বাগেরহাট, মোংলা প্রতিনিধি):
মঙ্গল শোভাযাত্রা, পূজা অর্চনা, গীতা পাঠ, কীর্তনসহ নানা কর্মসূচিতে মোংলায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে জন্মাষ্টমী মহোৎসব পালন করা হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢোল-তবলা বাজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের নাম-গানের মাধ্যমে ধরাধমে তাঁর আগমনকে স্বাগত জানান ভক্তবৃন্দ। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
এ উপলক্ষে শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা কেন্দ্রীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সনাতন ধর্মীবম্বলী তরুন-তরুনীসহ নানা বয়সের মানুষ বিভিন্ন সাজে ঢাক-ডোলসহ অংশ নিয়ে দেবকীর গর্ভে জন্মে নেয়া ভগবান শ্রী কৃঞ্চকে স্বাগতম জানায়।
উৎসবকে ঘিরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পরে উপজেলা কেন্দ্রীয় মন্দিরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো. জুলফিকার আলী শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন পরিবারের সবাইকে শুভ কামনা জানিয়ে বলেন, পারস্পারিক সহাবস্থানের মাধ্যমে সকল ধর্মের মানুষের একত্রে বসবাসই বাংলাদেশের ঐতিহ্য। যার যার ধর্ম সে পালন করবে, এটাই আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আশা করি, সম্প্রতির এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। সমাজের শান্তি, সম্প্রীতি ও মঙ্গলের জন্য কাজ করা সবার দায়িত্ব। একই সাথে আমাদেরকে অন্যায়, অবিচার ও অসংগতির বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে হবে।
শোভাযাত্রা ও আলোচনা পর্ব শেষে শুরু হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা অর্চনা। পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে জন্মাষ্টমি উপলক্ষে ভক্তবৃন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে অঞ্জলি প্রদান করেন। ধর্মীয় রীতি অনুসারে শিক্ষার্থী ভক্তবৃন্দ গীতা পাঠ ও কীর্তন করেন। পরে ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
জন্মাষ্টমির বিভিন্ন পর্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: আব্দুল মান্নান হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন পনি, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মানিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, হিন্দু পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম গ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুরশক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটি ভাবগাম্ভীর্যভাবে যথাযথ মর্যাদায় এ জন্মাষ্টমী উৎসব নানাভাবে উদযাপন করে।