
শরিফুল খান প্লাবন:
চারদিকের নীল আকাশ আর অপরূপ শাপলা-শালুকের মেলা। হিমেল বাতাসে ভেসে আসা অতিথি পাখির কলতান। প্রকৃতি যেন আপন রূপে সেজে বসেছে শ্রীনগরের আড়িয়াল বিলে। কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি ভুলে একদিনের জন্য সেই নৈসর্গিক রূপে স্নিগ্ধ হয়ে উঠলেন শ্রীনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের একঝাঁক সাংবাদিক।
শনিবার (২ আগস্ট) সকাল ৯টায় শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট বাজার থেকে বর্ণাঢ্য নৌ-ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রার ন্যায় সাজানো নৌকা বিলের বুকে ছুটে চলে। পদ্মপলাশের মতো প্রসারিত আড়িয়াল বিলের জলে প্রতিফলিত আকাশ আর বিলে দোল খাওয়া শাপলার মুগ্ধতা—সবকিছু মিলিয়ে যেন এক স্বপ্নিল অনুভূতি।
নৌ-ভ্রমণকারীরা আড়িয়াল বিলের নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঘুরে দেখেন। সাগরদিঘীর পাড়ে সবাই মিলে রান্না করেন নানারকম মুখরোচক খাবার। ভ্রমণপিপাসুরা প্রকৃতির সান্নিধ্যে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলেন, এ যেন জীবনের অন্যরকম অধ্যায়। পাখির কিচিরমিচির, হাওয়ার স্পর্শ আর অসীম জলরাশির মুগ্ধতা সবাইকে আপ্লুত করে তোলে।
দিবসব্যাপী এই ভ্রমণ শেষে বিকেল ৫টার দিকে পুনরায় গাদিঘাট বাজারে এসে নৌ-ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
নৌ-ভ্রমণে নেতৃত্ব দেন শ্রীনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ আল-আমীন, সহ-সভাপতি মোঃ ফরহাদ হোসেন জনি, সাধারণ সম্পাদক শেখ আছলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ তারিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আঃ মান্নান সিদ্দিকী, কার্যকরী সদস্য জাকির লস্কর প্রমুখ।
নৌ-ভ্রমণ শেষে প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ বলেন, “আড়িয়াল বিল শুধু শস্যভাণ্ডার নয়, এটি পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এক রত্ন। সরকার ইচ্ছে করলে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঘিরে গড়ে তুলতে পারে ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র, যা এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিলটি শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট থেকে শুরু হয়ে বাড়ৈখালী, হাসাড়া ও ষোলঘর ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। অবারিত এই জলাভূমি শুধু প্রকৃতির রূপ নয়, হাজারো মানুষের জীবিকারও নির্ভরযোগ্য উৎস।
এমন আয়োজনে সাংবাদিকদের মধ্যে নতুন উদ্যম ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধন সৃষ্টির প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।