Sunday, August 3, 2025

‎প্রধান শিক্ষক জিএম মাকসুদের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগের পাহাড় শিক্ষানীতি ল’ঙ্ঘন

Date:

Share post:

এস এস তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ

দিনে ক্লাস রাতে কোচিং! প্রধান শিক্ষকের নিয়মে কোচিং না করে পরিক্ষার খাতায় ভালো লিখলেও রেজাল্ট ভালো যাবেনা। বিদ্যালয় ছুটির পরপরই হতে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে মাকসুদের রাতের কোচিং।এমন আর্থিক ও মানষিক চাপে অভিভাবকদের সাথে সাথে কোচিং বানিজ্যের ফাদে ফেলে মণিরামপুর পৌরশহরের সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনী সহ সকল শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষানীতির বিপরীতে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের স্ট্রিম রোলার চালাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক জিএম মাকসুদুর রহমান।

‎এখানেই শেষ না! অভিযোগের অন্ত নেই অত্র সনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ২০১৮ সালে সৈরা-শাষকের কোটায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়া এই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন মোতাবেক গণীত ও ইংরেজী বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করান প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান।এ ছাড়াও প্রতিবছরই নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হলে বিভিন্ন চার্জ দেখিয়ে নেওয়া হয় এককালিন মোটা অর্থ, যা সম্পূর্ন শিক্ষা নিয়মনীতির বহির্ভূত।

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বেসরকারি কম্পানির দেওয়া অর্থের লোভে তাদেরই প্রকাশনার বই-পুস্তক প্রভাতী বিদ্যাপিঠের কেজি থেকে তৃতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ক্রয় বাধ্যতামুলক করে আসছেন মাকসুদ।তথ্য আছে দূরন্ত পাবলিকেশন,এ্যানি পাবলিকেশন সহ এরকম নামীয় বিভিন্ন কম্পানির এ সমস্ত বই কিনতে অভিভাবকদের সুপারিশ বাবদ মাকসুদ পাই এককালীন মোটা অর্থ।প্রাতিষ্ঠানিক ঘাপলাতেও সেরা মাকসুদুর রহমান!সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের বাথরুম বাবদ বরাদ্দের অর্থের একটি অংশ তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে এমনও অভিযোগ উঠেছিলো এই প্রধানের বিরুদ্ধে।

জিএম মাকুসুদুর রহমান প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মণিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি পদে আছেন।একই সাথে তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের মণিরামপুর উপজেলা শাখার কমিশনারের দায়িত্বে আছেন বলে জানা গেছে।
‎মুলত একজন শিক্ষক হয়ে একাধিক পদে থাকার ক্ষমতাবলে নিজের খেয়ালখুশি মোতাবেক নিজেও চলেন আবার ঐ প্রতিষ্ঠানের বাকি শিক্ষকদেরও চলতে বাধ্য করেন বলে এ তথ্য নিশ্বিত করেছেন ঐ প্রতিষ্ঠানেরই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক।

‎তথ্য আছে,আ”লীগ সৈরাশাষকের ভরা যৌবনে অর্থাৎ ২০১৮ সালে তৎকালীন এমপি স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার ভাগ্নে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলুর সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষক হিসাবে প্রভাতী বিদ্যাপীঠের চেয়ারে বসেন।

এরপর থেকে যে কোন জাতীয় প্রগ্রাম,দেনদরবার সবকিছুতেই এই শিক্ষকের উপস্থিতি দেখা গেছে। মণিরামপুর পাবলিক লাইব্রেরীতেও চালিয়েছেন একক অধিপত্যে, তবে সেটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মণিরামপুর উপজেলা আ”লীগ সহ হাইভোল্টেজ কয়েকজন ১ম সারির নেতাদের সাথে মাকসুদের সম্পর্ক ছিলো অনেকটা ওপেন-সিক্রেটের মতো। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে,তার ছেলে মেহেদী হাসানকেও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পতাকাতলে ভেড়াতে শিক্ষক মাকসুদ জুগিয়েছিলো অনুপ্রেরণা।বর্তমানে তার ছেলেও আত্মগোপনে আছে।কোচিং বানিজ্য সহ শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক উপার্জিত অবৈধ অর্থে পৌরশহরের দূর্গাপুরে নিজের কেনা জমিতেই বহুতল কলামে হাকিয়েছেন তিনতলা বাড়ি।অথচ,এই প্রধান শিক্ষকের সাথে এ প্রতিবেদকের হওয়া এক ফোনালাপের রেকর্ডকৃত আলাপে মাকসুদকে বলতে শোনা যাচ্ছে “আপনি তো সবই বোঝেন! বর্তমানে সরকার যা বেতন দেই তাতে বাড়ির লোকের চাহিদা,ছেলে-মেয়ের খরচ,ব্যাক্তিগত স্টাটাসে চলা দুস্কার।আমার ৩১+ হাজার টাকার বেতনে হিমশিম খেয়ে বাধ্য হয়ে পড়াতে হয়।

প্রতিষ্টান প্রধান জিএম মাকসুদুর রহমানের পারবারিক ভোগবিলাসের বাহানা আর বিদ্যালয় হতে ৫০মিঃ দূরত্বে ভাড়া নেওয়া কোচিং রুমের  শিক্ষানীতি লঙ্ঘনের ঘটনা! তার সাথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপর অতিরিক্ত চাপ তবুও নেই কোন অভিযোগ। কেউ বলতে চাননা কোন কথা,তথ্য নিতে প্রতিষ্ঠানে গেলও কেউ জানতে চাইলেন না কার কাছে কেনো এসেছেন!এমনকি প্রধানকে না পেয়ে এক শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে সম্মুখেই কথা না বলেই এড়িয়ে চলে গেলেন।

অনুসন্ধানী এই প্রতিবেদনের অভিযুক্ত মণিরামপুর পৌরশহরের সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সঃপ্রঃবিঃ এর প্রধান শিক্ষক জিএম মাকসুদুর রহমান ইতিপূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ স্কাউটসের কার্যক্রমে তার নিজ দায়িত্বে(কমিশনার) চরম ব্যার্থতার দায়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলেন।  বিগত কয়েকবছর আগেও এই কোচিং বানিজ্যের কারনে শিক্ষানীতির সন্মান হারানো শিরোনামে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার পাতায় ছবিও হয়েছেন। তবুও অজানা কোন শক্তিতে বহাল তবিয়তেই শিক্ষানীতি লঙ্ঘিত এহেন কর্মকান্ড ওপেন-সিক্রেটে করে চলেছেন বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক জিএম মাকসুদুর রহমান।

‎মণিরামপুর পৌরশহরের বিগত দিনের সনামধন্য প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সঃপ্রাঃবিঃ এর সন্মান রক্ষার্থে এ সমস্ত বিষয়াদি নিয়ে অভিভাবকরা চিন্তিত থাকলেও কেউ কোন অভিযোগ করতে চাইনা বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক অভিভাবক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

‎মণিরামপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু মুত্তালিব নিজেও বললেন কোন লিখিত অভিযোগ না থাকায় ব্যাবস্থা নেওয়া সম্ভব না। পরবর্তীতে যশোর জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আশরাফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মণিরামপুরে সাবেক নেতার মৃত্যুতে উপজেলা বিএনপির শোক

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ যশোরের মণিরামপুরে ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী মোঃ নজরুল ইসলামের দাফন...

সখিনার -সাহায্যে এগিয়ে এলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার

রতন শর্মা, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের ১৮ বছর আগে স্বামী হারা সখিনা বেওয়ার জীবন যেন...

জলাবদ্ধতার নিরসন চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর খোলা চিঠি

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বরাবর জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চেয়ে সোস্যাল মিডিয়া ফেইসবুকে নদী(No Di)...

দুর্গাপুরে প্র’তিবন্ধী নারীকে ধ’র্ষণ ওসির সা’হসী ভূমিকায় গ্রে’প্তার ১

মুন্না ইসলাম আগুন (দূর্গাপুর) রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুরে আম বাগানে লাকড়ি সংগ্রহে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক প্রতিবন্ধী...