
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপরেটর মাহাবুবুর রহমান। সৌদি প্রবাসী মৃত বাবুল চৌধুরীর পরিবারকে ‘মৃত দাবির’ টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে সাতকাহন নামক অনলাইন পত্রিকায় একটি ভিডিও নিউজও প্রচারিত হয়।
নিউজের সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই দুর্নীতিগ্রস্থ মাহবুব তদবিরের মাধ্যমে স্বপদে বহাল থাকার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত মাহাবুবুর রহমান কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনকালে মোস্তাফিজুর রহমান অপুর সাথে যোগাযোগ করে সৌদি আরবে তার শ্বশুর মৃত বাবুল চৌধুরীর নামে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ৩ (তিন) লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৯০,০০০/- (নবাই হাজার) টাকা (প্রথমে ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা এবং পরবর্তীতে টাকা পাওয়ার পরে আরো ৫০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা লেনদেনের মাধ্যমে চুক্তি করেন। এ বিষয়ে অভিযোগকারী একটি অডিও রেকর্ড ও অভিযোগের প্রমাণ স্বরূপ ভিডিও ক্লিপ প্রদান করেন।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রাথমিক তদন্তে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় মাহবুবকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড (কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা ২০২০ এর ৫৯ বিধি অনুযায়ী ২১/০১/২০২৫ তারিখে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড (কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা, ২০২০ এর ৫৭ বিধি অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং কেনো তাকে চাকুরি প্রবিধানমালা, ২০২০ এর ৫৪ (খ) বিধি অনুযায়ী বরখাস্ত বা অন্য কোন দণ্ড আরোপ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিলের জন্য বলা হয় এবং তাকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে শুনানী প্রদানে আগ্রহী কিনা তাও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসী কল্যাণ ভবন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক নূর মোঃ মাহবুবুল হক স্বাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়।
যার : স্মারক: ০০৪/২০২৪ নম্বর- ৪৯,০৪,০০০০.০০৪.১৮.০২৩.২০২১-০৭১ লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়।
সুত্র জানায়, অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পর নামমাত্র তদন্ত এবং লোক দেখানো সাময়িক বরখাস্ত করে কোন অদৃশ্য তদবিরের প্রেক্ষিতে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীকে! যা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান যারা কিনা প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। এহেন কর্মকান্ড ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ভাবমূর্তিকে অনেকাংশে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার পর্যায় পড়ে।
বিশ্বস্তসূত্রে আরও জানাযায়, মাহবুব শুধু এই একটি ঘটনাই নয় মাহবুব আরও বহু লোকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে মৃত্যু দাবির টাকা পাইয়ে দিয়েছে। চাকরির অল্প সময়ের মধ্যে মাহবুব লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হয়েছেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিজ ও স্ত্রীর নামের কিনেছেন ১০/১২ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র। কয়েকটি ব্যাংকে ৫/৬ লক্ষ টাকার এফডিআর। এছাড়াও দামী ফ্ল্যাট কেনার জন্য ফ্ল্যাট দেখছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অনেক কর্মকর্তা বলেছেন, মাহবুব একজন দুর্নীতিবাজ কর্মচারী, তিনি বহু লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এতদিন ধরা পড়েনি।
দুঃখজনক ব্যাপার হলো, একজন দুর্নীতিবাজ বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া ও সকল ধরনের সত্যতা থাকা সত্ত্বেও অদৃশ্য শক্তির কারণে সকল অপরাধ কক্ষা করে আগের পদেই বহাল রাখা হয়েছে।
এ বিষয় জানার জন্য মাহবুবকে কল করলে, পরে কথা বলার কথা বলে ফোন রেখে দেয়। এরপর বহুবার কল করলে ফোন রিসিভ করে জবাব দেয় রং নম্বর, এখানে মাহবুব নামে কেউ নেই।