
কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৮নং মালিয়াট ইউনিয়ন যুবলের কর্মী নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। নাজমুল হোসেন উপজেলার পারখিদ্দা গ্রামের মৃত হাসিবুল ইসলামের ছেলে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক সুজাউদ্দীন মাহমুদ পিয়াল স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে যুবদলের ওই কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন। ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের উদ্যোক্তা ষাটবাড়ীয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে খামিনুর রহমান ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাচকাউনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী খামিনুর রহমান কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত শনিবার (৫ জুলাই) বেলা আনুমানিক ২ টার সময় যুবদল কর্মি নাজমুল হোসেন ও তার সাথে থাকা আশিকুর রহমান উদ্যোক্তা খামিনুরের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। এ সময় তারা তাকে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয় এবং তাকে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে জানায়। চাঁদা দিতে অস্বিকার করায় তারা খামিনুর রহমানকে মটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
এ সময় খামিনুরের কাছে থাকা ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনা স্থল থেকে চলে যায়।
চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাজমুলের-০১৩২৮১৩৯৯৩০ মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান, আমরা বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত।
আমার মা আওয়ামীলীগের আমলে এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মহিলা সদস্য নির্বাচিত হয়। সেই থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল খাঁ আমার মায়ের কোন কাজ কাম দেয় না এবং আওয়ামীলীগের আমলে আমার মাকে আজিজুল খাঁর মটরসাইকেল চালক শাহাবুদ্দিন সাবুলসহ কয়েকজন মারধর করছিল। তিনি একজন মহিলা ইউপি সদস্য সে তো ইউনিয়ন পরিষদে যাবেই। আমার মা পরিষদে গেলে তাকে কোন ভাতার কার্ড এবং অন্যান্য কোন সুযোগ সুবিধা তো দেনই না। আবার কম্পিউটার অপারেটর খামিনুর বলে এখানে কিসের জন্য আসছেন।
ওই দিন খামিনুরকে এই কথা জিজ্ঞাসা করলে খামিনুর বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে নেতাদের জানাতে থাকে। এরমধ্যে দেখি ঘটনাস্থলে তত্তিপুর ফাড়ি থেকে পুলিশ চলে আসছে। পুলিশের সামনেই খামিনুর মটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেছে। তাহালে তার মটরসাইকেল কিভাবে কেড়ে নিলাম। তাকে মারধর, মটরসাইকেল ও টাকা পয়সার কোন কথাই হয়নি।
অভিযোগে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা লিখেছে। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য থানায় এই ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছে। মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল খাঁ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, যেহেতু এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেহেতু এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াতেই সমাধান হবে।
জাতীয়তাবাদী যুবদল কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সুজাউদ্দীন মাহমুদ পিয়াল বলেন, কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় দল বা সংগঠন নেবে না। যুবদল কর্মীর নাজমুল হাসান এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ছিনতাই এর মত অভিযোগের সত্যতা জানতেই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমানিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী খামিনুর রহমান থানায় একটি চাঁদাবাজি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ইতিমধ্যে এই ঘটনা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছেন। সত্যতা মিললে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।