
মোঃ ওয়াজেদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার:
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জমির নামজারির ফি ১,১৫০ টাকা নির্ধারণ থাকলেও যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভোজগাতী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ন্যূনতম ৬,০০০ টাকা আদায় করছেন নায়েব আব্দুল সাত্তার। অভিযোগ রয়েছে, কাগজপত্র সঠিক থাকলেও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে তিনি আদায় করছেন ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ।
স্থানীয় অনেক ভূমি মালিকের অভিযোগ, সামান্য ভুল থাকলেই তা দেখিয়ে নিজের পকেটে টাকা ভরছেন তিনি। কেউ ঘুষ দিতে রাজি না হলে দিনের পর দিন হয়রানি করছেন, এমনকি কাগজপত্র আটকে রেখে কাজ বন্ধ করে দেন। নামজারি, জমি ভাগ, পর্চা তোলা কিংবা খাজনা প্রদানের প্রতিটি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কোনো কাজ করতে হলে চুক্তির টাকা না দিলে সেই ফাইল নড়েই না। জমির মালিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা, সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে অনৈতিক পন্থায় অর্থ আদায় করা তার নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
খেদাপাড়া ইউনিয়নে কর্মরত থাকাকালে কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ৩ বছর আগে নামজারি করতে ২৫,০০০ টাকা দিলেও এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। হেলেন্চি গ্রামের আব্দুর আতিয়ার রহমানও ২৭,০০০ টাকা দিয়েও কাজের ফল পাননি। টুনিয়াঘরা গ্রামের নজির আলী ছয় মাস আগে টাকা দিয়েছেন, কিন্তু এখনও তার দেখা পান না।
অফিসে গেলে কেউ অভিশাপ দিচ্ছেন, কেউ তালা মারার হুমকি দিচ্ছেন, কেউবা বলছেন “মাংস ছিঁড়ে নেব” — এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভোজগাতী ভূমি অফিসে।
জানা গেছে, নায়েব আব্দুল সাত্তারের চাকরির মেয়াদ আর মাত্র ১০–১২ দিন। কিন্তু এখনো প্রতিদিন তিনি ঘুষের অর্থ দাবি করে সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করছেন। কেউ টাকা ফেরত চাইলে বলেন “আজ দেবো, কাল দেবো” — এই করে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সরাসরি টাকা দিলে কাজ না হলেও দালালদের মাধ্যমে ঘুষ পৌঁছালে ফাইল দ্রুত প্রসেস হয়।
ভুক্তভোগীরা মনিরামপুর উপজেলার এসিল্যান্ডসহ উর্ধ্বতন সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন, দুর্নীতিগ্রস্ত এই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।