মোঃ লুৎফর রহমান লিটন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এক হোটেল কর্মচারী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নারী ও পুরুষসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
রবিবার (২৫ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (১) আদালতের বিচারক মো. আলমগীর হোসেন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের মো. আলম সেখের ছেলে ফিরোজ (২১) এবং সলঙ্গা থানার তারুটিয়া উত্তরপাড়ার শামসুল হকের মেয়ে জুলেখা খাতুন (২১)।
নিহত হোটেল কর্মচারীর নাম আরাফাত খান (৩৫)। তিনি ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী উপজেলার আলিপুর পাকিস্থানপাড়ার মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। সলঙ্গার রাধানগর গ্রামের শাপলা খাতুন নামে এক নারীকে বিয়ে করে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং একটি হোটেলে কাজ করতেন।
ডিবি পুলিশের ওসি একরামুল হোসাইন জানান, গত ২৩ মে সকালে হাটিকুমরুল গোলচত্বরের পাশে সওজ অফিসের পরিত্যক্ত ভবনের পেছন থেকে আরাফাত খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শাপলা খাতুন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ শনিবার রাতে হাটিকুমরুল এলাকা থেকে প্রথমে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জুলেখা খাতুনকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। রবিবার বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
জবানবন্দিতে ফিরোজ জানায়, আগে একবার চুরি করে ভাগের টাকা হিসেবে আরাফাত খানের কাছে ৫ হাজার টাকা পাওনা ছিল। ২২ মে রাতে আরাফাত পাইপ চুরি করতে হাটিকুমরুল গোলচত্বরের পাশে সওজ অফিসের পেছনে যায়। ফিরোজ সেখানে আরও দুই সহযোগীসহ উপস্থিত হয় এবং ২ হাজার টাকার চুক্তিতে যৌনকর্মী জুলেখা খাতুনকেও সেখানে নিয়ে আসে।
একপর্যায়ে টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডার সময় আরাফাত ফিরোজকে চড় মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজ ও জুলেখা মিলে ইট দিয়ে আরাফাতের মাথা ও মুখ থেতলে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ সময় অন্য দুই সহযোগী পাহারায় ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।