
হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ):
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা শামিম হোসেন ফুল চাষে পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। বর্তমানে তিনি প্রায় ১২ বিঘা জমিতে জারবেরা, গাদা, মামফুল ও চন্দ্রমল্লিকা ফুলের চাষ করছেন। তার এই উদ্যোগে শুধু নিজের সফলতাই নয়, কর্মসংস্থান হয়েছে আরও অন্তত ৬ জন মানুষের। ফুলের মৌসুমে অস্থায়ীভাবে কাজ পান আরও ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক।
শামিম হোসেন ২০১২ সালের দিকে পড়াশোনার পাশাপাশি অল্প কিছু জমিতে ফুল চাষ শুরু করেন। ২০১৫ সালে মাত্র দুই বিঘা জমিতে গাদাফুল চাষ দিয়ে তিনি ফুল চাষে পূর্ণাঙ্গভাবে যুক্ত হন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুল ব্যবসায়ও যুক্ত হয়ে যান তিনি। বর্তমানে তার খামারে আড়াই বিঘা জমিতে জারবেরা, চার বিঘা জমিতে গাদা, চার বিঘা জমিতে চন্দ্রমল্লিকা এবং ২০ শতাংশ জমিতে মামফুলের চাষ হচ্ছে।
ফুল চাষে তিনি পেয়েছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আশা’র আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা। প্রথম ধাপে তিনি ৪ লাখ টাকা ঋণ পান এবং তা পরিশোধের পর আরও সাড়ে চার লাখ টাকার আর্থিক সহযোগিতা পান ফুল চাষ সম্প্রসারণের জন্য। ‘আশা’র আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের ফুল চাষ প্রকল্পের আওতায় তিনি জারবেরা ফুল চাষ শুরু করেন।
শামিম হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে জারবেরা চাষে খরচ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা, তবে ভালো ফলন হলে বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার ফুল। সাধারণত একটি জমি থেকে তিন বছর পর্যন্ত জারবেরা ফুল সংগ্রহ করা যায়। গাদা ফুলের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভালো লাভের সুযোগ—এক বিঘা গাদা চাষে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা, যেখানে এক বছরে লাভ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
ফুল চাষে তার সাফল্য দেখে এখন এলাকার অনেক তরুণও আগ্রহী হয়ে উঠেছে এই খাতে। স্থানীয় বাজারে, বিশেষ করে বলিডাঙ্গা বাজারে, তিনি ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী হিসেবে সুপরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন।
আশা’র টেকনিক্যাল অফিসার (কৃষি) কিলন চন্দ্র রায় জানান, তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে শামিম হোসেনকে তারা শুধু ঋণ নয়, নিয়মিত কারিগরি পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছেন। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ফুল চাষে এগিয়ে আসছেন। আশা’র বালিয়াডাঙ্গা ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান বলেন, শামিম হোসেনের এই চেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিতে তারা পাশে থাকবেন সবসময়।