Monday, September 15, 2025

কালীগঞ্জে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস টাকা ছাড়া কাজ করে না

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ : 
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে টাকা না দিলে শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন কাজের ফাইল কোনো কারণ ছাড়াই আটকে রাখা হয়। উপজেলায় কর্মরত মাধ্যমিক  শিক্ষক কর্মচারীদের ইএফটি এবং এমপিওর বিভিন্ন সংশোধনী, আপার স্কেল, বিএড স্কেল, টাইম স্কেলসহ বিভিন্ন কাজের কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তর অনলাইনের মাধ্যমে প্রেরণ করে থাকে ।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ব্যক্তিগতভাবে অর্থ আদায়ের জন্য নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের মাসের পর মাস হয়রানি করেই চলেছেন। উক্ত অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মকসেদুল আলমের মাধ্যমে  শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট থেকে ১ হাজার থেকে ৫  হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়ে থাকেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছু  একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন । একজন ভুক্তভোগী উপজেলা রামচন্দ্রপুর গ্রামে অবস্থিত নতুন বাজার সম্মিলিত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এই প্রতিবেদককে বলেন, এমপিওভুক্ত’র জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলাম।
আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ফরওয়ার্ডিং করার কথা থাকলেও তা না করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। কাজের অগ্রগতির বিষয়ে রমজান মাসের প্রথম দিকে  খোঁজখবর নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কার্যালয় গেলে ওই অফিসের অফিস সহায়ক  মকসেদুল আলম মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নাম করে দ্রুত অনলাইনে ফাইল পাঠানোর জন্য ৫ হাজার টাকা ঘুষ চান।
ওই সময় পুরো টাকা কাছে না থাকায় প্রথমে ২ হাজার ৫০০  পরবর্তীতে ২ হাজার সর্বমোট ৪ হাজার ৫০০ টাকা আমি তাকে দেই। তখন থেকে আজ অব্দি ঘুষ নিয়েও আমার কাজটি না করে বারবার ঘুরাচ্ছে। মুখে কিছু বলছে না হয়তো আরো কিছু টাকা তারা প্রত্যাশা করে। অফিসে গেলে কিংবা ফোন দিলে ফাইল ছেড়ে দিচ্ছি বা দেবো এমন কথা বলে কিন্তু কাজের কাজ কিছু করে না। বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যেকোনো কাজে উৎকোচ হিসেবে অর্থ আদায় করা হচ্ছে।
সাধারণ শিক্ষক কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, এই দুর্নীতিপরায়ন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল এ অফিসের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাপকভাবে হয়রানি ও অনলাইনে ফাইল নড়াতে অর্থ গ্রহণের প্রচলন শুরু করেছেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মকসেদুল আলম শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,  শিক্ষকরা আমার নামে মিথ্যাচার করছেন।
ফাইল ছাড়ার বিষয় মাধ্যমিক স্যার দেখাশোনা করেন। এখানে আমার কোনো কাজ নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জানান,আমাকে নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করা হচ্ছে। আমি কাজের জন্য কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। অফিসের পিয়ন তো আর কাজ করে না, তাহলে শিক্ষক কর্মচারীরা তার নিকট কেন টাকা দিচ্ছে?  ব্যাপারটা আমি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও হয়রানির  ব্যাপারে বলেন,অফিসের যেকোনো কাজের ব্যাপারে উৎকোচ গ্রহণ কিংবা হয়রানির কোন সুযোগ নেই।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের বলব অতিরিক্ত টাকা চাইলে কিংবা হয়রানি করলে সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। উপজেলা মাধ্যমিক অফিসে কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

জামায়াত এনসিপি হচ্ছে আওয়ামী লীগের বি ও সি টিম আমজাদ হোসেন মামুন

 নুর-বীন আব্দুর রহমান রাহাত,  ঢাকা: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আমজাদ হোসেন মামুন বলেছেন, জামায়াত ও এনসিপি আসলে...

আজ মগরাহাট পশ্চিমের উস্তি কে সি এম উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলা তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ সকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উস্তি কে সি পি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি...

মনিরামপুর ভূমি অফিসে দু”র্নীতির স্বর্গরাজ্য – নৈশ প্রহরীও ‘স্যার’

মনিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুর ভূমি অফিস দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। অফিসের নৈশ প্রহরী আসাদও সেখানে...

নড়াইলে তরুণ উদ্যোক্তা প্রযুক্তির আলো তুলে দিতে চান তরুণ প্রজন্মের কাছে

সাজ্জাদ তুহিন,নড়াইল প্রতিনিধিঃ আমাকে সৃষ্টিকর্তা যে সামান্য জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়েছেন,তা আমি সাথে নিয়ে যেতে পারব না। কিন্তু রেখে...